রাজ্য – বাংলায় কি তবে ‘এসআইআর’ হতে চলেছে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। যদিও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবু রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। বুথ সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন বিএলও নিয়োগ, এইআরও এবং ইআরও সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখে অনেকেই মনে করছেন, ভোট পূর্ববর্তী ভোটার তালিকা সমীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এই আবহেই রাজ্যের রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছে ‘এসআইআর’ বা ‘স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন’।
এসআইআর নিয়ে শাসক দল ও বিরোধীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতোর। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে কোনো মূল্যে বাংলায় এসআইআর কার্যকর করা হবে। এমনকি তাদের মুখে শোনা যাচ্ছে স্লোগান— ‘নো এসআইআর, নো ইলেকশন’। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, রাজ্যে এসআইআর হলে ১০ লক্ষ মানুষ নিয়ে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে। তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট— কোনোভাবেই এসআইআর কার্যকর হতে দেওয়া হবে না।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই দলের বুথ স্তরের এজেন্টদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সল্টলেকের একটি অফিসে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সদস্য জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির বাজোরিয়া। পাশাপাশি ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন প্রায় ৭০০ জন নেতা-কর্মী।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৈঠক থেকে শুভেন্দু অধিকারী দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠিয়েছেন। তার বক্তব্য, ভোটার তালিকা থেকে ‘বেনো জল’ দূর করার জন্য এসআইআরই হলো ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ এবং এটিই দলের কাছে ‘শেষ সুযোগ’। বিজেপি নেতৃত্ব বুথ স্তরের রিপোর্ট আগামী ৫ থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই রিপোর্ট ৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। শুভেন্দু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই কাজে অবহেলা করলে পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভ করা কঠিন হবে। এখন দেখার বিষয়, এসআইআর-কে হাতিয়ার করে বিজেপি কি তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করতে পারে কিনা।
