দেশ – ভারতের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে আরও শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক করার লক্ষ্যে আজ, মঙ্গলবার, সেমিকন ইন্ডিয়া-২০২৫ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিন দিনব্যাপী এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হল দেশে একটি শক্তিশালী ও টেকসই সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী বুধবারও সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।
সম্মেলনে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে সেমিকন ইন্ডিয়া কর্মসূচির অগ্রগতি, সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব এবং অ্যাডভান্সড প্যাকেজিং প্রকল্প, পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, গবেষণা ও উন্নয়ন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের সুযোগ। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাজ্য সরকারের নীতি বাস্তবায়ন এবং শিল্প বিকাশের কৌশল নিয়েও বিশেষভাবে আলোচনা হবে।
এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিজাইন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ (ডিএলআই) স্কিমের আওতায় নতুন প্রস্তাবনা, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের বিকাশ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং ভারতের সেমিকন্ডাক্টর খাতের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে বিস্তৃত পর্যালোচনা হবে। এই পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য হলো দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা এবং ভারতের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানো।
জানা গেছে, এই বছরের সেমিকন ইন্ডিয়া সম্মেলনে ৪৮টিরও বেশি দেশ থেকে ২,৫০০-এর বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। এর মধ্যে থাকবেন ৫০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব এবং ১৫০টিরও বেশি বক্তা। সম্মেলনে প্রায় ৩৫০টি প্রদর্শনী স্টল থাকবে এবং মোট ২০,৭৫০-এর বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও, ছয়টি দেশের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নের পাশাপাশি বিশেষ মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও স্টার্টআপ উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভিশন অনুযায়ী, ভারতকে সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন, উৎপাদন ও প্রযুক্তি বিকাশের অন্যতম বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এর আগেও একাধিক সেমিকন ইন্ডিয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০২২ সালে বেঙ্গালুরু, ২০২৩ সালে গান্ধীনগর এবং ২০২৪ সালে গ্রেটার নয়ডায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাম্প্রতিক জাপান সফরও এই সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সফরে ভারত ও জাপানের মধ্যে ২১টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রের সহযোগিতা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মোদী টোকিও ইলেকট্রনের সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন এবং দুই দেশ উন্নত প্রযুক্তিতে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জাম ও উপাদানের ক্ষেত্রে জাপানকে বিশ্বনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এই চুক্তির অন্যতম লক্ষ্য হলো জাপানের পুরোনো কিন্তু কার্যকর প্রযুক্তি ভারতে স্থানান্তর করা, যাতে চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো যায় এবং দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সুদৃঢ় হয়।




















