১০১ বছরের ঐতিহ্যে ভর করে আজও আলোকিত ভবানীপুর মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো

১০১ বছরের ঐতিহ্যে ভর করে আজও আলোকিত ভবানীপুর মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



বিনোদন – কলকাতার বনেদি বাড়ির সাবেকি দুর্গাপুজোর কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একচালা চালচিত্রের প্রতিমা, ডাকের সাজ এবং টানা টানা চোখের দেবীমূর্তি। পুরোনো বাড়ির গন্ধ মাখা সেই আভিজাত্যের সমস্ত উপাদান আজও অটুট রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ির দুর্গাদালানে। ১৯২৪ সালে রাধামাধব মল্লিকের পুত্রদের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এই পুজো, যা এ বছর পা দিল ১০১তম বর্ষে।

মল্লিক পরিবারের আদি নিবাস ছিল হুগলির গুপ্তিপাড়ায়, যেখানে প্রথমবার দুর্গাপুজো শুরু হয়। পরে পরিবার কলকাতায় চলে এলে বেশ কয়েক বছর বন্ধ ছিল পুজো। এরপর রাধাগোবিন্দ মল্লিকের পুত্র সুরেন্দ্র মাধব মল্লিক ১৯২৪ সালে ভবানীপুরের বাড়িতে পুনরায় এই পুজোর সূচনা করেন। তখন পরিবারের সাত ভাই যৌথ উদ্যোগে পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে শুরু হওয়া এই পুজো আজও একই আভিজাত্য ও গরিমা বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে।

মল্লিক বাড়ির ঠাকুর তৈরির রীতি বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। জন্মাষ্টমীর পরের দিনই মায়ের কাঠামো পুজো হয় এবং বাড়ির দালানেই প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয়। এখানে একচালা প্রতিমা ও ডাকের সাজের ঐতিহ্য এখনও সমানভাবে বহমান। বৈষ্ণব মতে পুজো হয় বলে এখানে কোনও পশুবলির রীতি নেই। মহালয়ার পরের দিন মা চণ্ডীর ঘট বসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় চণ্ডীপাঠ, যা মায়ের বিসর্জন পর্যন্ত চলতে থাকে। পুজোর সময় পুরো পরিবার নিরামিষ আহার করেন এবং দশমীর দিন মায়ের বিদায়ের পর আমিষ ভোজনের প্রথা পালন করা হয়।

দশমীর সকালে বাড়ির মহিলারা প্রথমে দেবীকে বরণ করেন, এরপর শুরু হয় সিঁদুর খেলা। রীতি মেনে কাঁধে করে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পুজোর প্রতিটি মুহূর্তে আজও ফুটে ওঠে সেই প্রাচীন ঐতিহ্যের ছাপ।

কলকাতার দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে বহুবার শহরের চেহারায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সেই পরিবর্তনের স্রোতে গা না ভাসিয়ে স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্য বজায় রেখে আজও নিজস্ব গরিমায় উজ্জ্বল ভবানীপুর মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top