বিদেশ – রাজনৈতিক অস্থিরতায় উত্তাল নেপাল। সম্প্রতি গণবিক্ষোভের জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে নেপালের ভবিষ্যৎ নিয়ে দানা বাঁধছে নানা জল্পনা। দেশের যুবসমাজ বা ‘জেনারেল জি’ এক নতুন মুখকে নেতৃত্বে বেছে নিয়েছে—তিনি সুশীলা কার্কি, যিনি একসময় নেপালের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, এই সরকার কি পূর্ণ ক্ষমতা পাবে?
নেপালের সংবিধানের ১০০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কোনো সরকার ভেঙে গেলে বা প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে কেয়ারটেকার বা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কিন্তু এর ক্ষমতা সীমিত। এই সরকার কেবলমাত্র দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ সামলাতে পারে। বিদেশনীতি, সামরিক বাহিনী কিংবা নতুন আইন প্রণয়নের মতো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকে না। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের জন্যই এই ধরনের সরকার টিকে থাকে।
২০১৬ সালে নেপালের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন সুশীলা কার্কি। নিরপেক্ষ ও সৎ বিচারক হিসেবে তিনি ব্যাপকভাবে সম্মানিত। জনগণের একাংশের আস্থা এখন তাঁর দিকেই। তাই আশা করা হচ্ছে, তাঁর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার অন্তত বর্তমান সংকট সামলানোর চেষ্টা করবে।
নেপালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়াও ভারতের থেকে খানিকটা আলাদা। সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী হন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে একজন। রাষ্ট্রপতি সবচেয়ে বড় দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত করেন এবং তাঁকে ৩০ দিনের মধ্যে সংসদের আস্থা ভোটে জিততে হয়। ব্যর্থ হলে অন্য নেতাকে সুযোগ দেওয়া হয়।
এই অবস্থায় সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নেপালের অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন দিশা দেখাতে পারে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
