কলকাতা – নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর মেট্রো রুটে এবার থেকে সপ্তাহান্তেও পরিষেবা মিলবে। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ নতুন টাইম টেবিল প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শনিবার ও রবিবারও চালু থাকবে এই পরিষেবা। এর আগে ২২ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই রুটের উদ্বোধনের পর সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মেট্রো চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবেই নতুন সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। রবিবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা ২২ মিনিট পর্যন্ত। পুজোর আগে যাত্রীদের চাহিদা ও ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই রোজগার বৃদ্ধির পাশাপাশি এই নতুন সূচি চালু করা হয়েছে।
সপ্তাহান্তে অনেকেই কেনাকাটা বা বেড়াতে বের হন। সেই কথা মাথায় রেখে যাত্রীদের দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। উৎসবের মরশুমে এই পদক্ষেপকে যাত্রীবান্ধব উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্প এখনও আটকে আছে চিংড়িঘাটায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে জটিলতায় স্থগিত রয়েছে কাজ। মঙ্গলবার মেট্রো ভবনে বৈঠকে বসে সমাধানের পথ খোঁজা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেট্রো রেল বিকাশ এবং কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে নভেম্বরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে শুক্র, শনি ও রবিবার ট্রাফিক বন্ধ রেখে ওই অসমাপ্ত কাজ করা হবে। সেদিনগুলোতে চিংড়িঘাটা মোড়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে অন্য রুটে।
চিংড়িঘাটার মাত্র ৩৬৬ মিটার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারলেই নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অরেঞ্জ লাইন চালু হয়ে যাবে। বর্তমানে গড়িয়া থেকে বেলেঘাটা পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও পুরো বিমানবন্দর পর্যন্ত লাইন কার্যকর হয়নি।
চিংড়িঘাটা অংশের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে আরভিএনএল-এর। এই কাজ শেষ হলে দক্ষিণ কলকাতা থেকে সরাসরি উত্তর-পূর্ব প্রান্তে বিমানবন্দর যাওয়া আরও সহজ হয়ে যাবে।
অরেঞ্জ লাইন চালু হলে শহরের গতি আরও বাড়বে। বিশেষত বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের কাছে এটি হবে বড় ভরসার। নিউ গড়িয়া থেকে জয়হিন্দ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রা অনেকটাই কম সময়ে সম্ভব হবে।
এছাড়া সেক্টর ফাইভ, রাজারহাট, নিউটাউন-এর সঙ্গে শহরের সরাসরি সংযোগ অনেক মজবুত হবে। যাত্রীদের জন্য সময় বাঁচানো ছাড়াও আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ তৈরি হবে।
চিংড়িঘাটার অচলাবস্থা কেটে গেলে শুধু মেট্রো নয়, ওই অঞ্চলের যানবাহন চলাচলও আরও স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে আন্ডারপাস তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
মেট্রো ভবন সূত্রে খবর, কর্তৃপক্ষের একমাত্র অগ্রাধিকার এখন চিংড়িঘাটার জট কাটানো। কারণ এই ছোট্ট অংশ অসম্পূর্ণ থাকায় গোটা প্রকল্প আটকে রয়েছে।
উৎসবের মরশুম শেষে নভেম্বরেই চিংড়িঘাটায় কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। ফলে অচিরেই দক্ষিণ থেকে উত্তর-পূর্ব কলকাতার সংযোগ সুদৃঢ় হবে।
মেট্রো রেলের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় এক বড় পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা পাবেন ঝামেলাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর রুট সপ্তাহান্তে খোলার সিদ্ধান্তকে যাত্রীরা ইতিমধ্যেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি চিংড়িঘাটার কাজ শেষ হলে কলকাতা মেট্রোর অরেঞ্জ লাইন হয়ে উঠবে শহরের অন্যতম প্রধান লাইফলাইন।
