দেশ – ভারতের বাজারে ইলিশের দাম কমে যাওয়ায় রপ্তানি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। নদীতে মাছের সংখ্যা কম থাকায় এবং ভারতের রপ্তানি মূল্যের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম মিল না থাকায় বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন আড়তে ব্যবসায়ীরা ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এর ফলে চলতি মরশুমে ভারতের ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ এবছর ভারতে ১,২০০ টন ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়েছিল। তবে গত কয়েক দিনের চিত্রে দেখা যাচ্ছে, এই লক্ষ্য পূরণ করা সহজ নয়। মাত্র ৫০০ টন রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নদীতে পর্যাপ্ত মাছ না ওঠায় রপ্তানিতে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। দুই দিন ধরে ভারতে ৬৩ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর পরই সমস্যার সূচনা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ভারতীয় বাজারের মূল্যের তুলনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বেশি হওয়ায় জেলেরা রপ্তানিতে আগ্রহী নয়। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাজারে চাহিদা আগের মতো নেই এবং লোকসানের আশঙ্কায় অনেকে রপ্তানি করতে অনিচ্ছুক। চলতি মরশুমের শুরু থেকেই সাগর ও নদীতে পর্যাপ্ত ইলিশ না ওঠায় দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
৬০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশের পাইকারি দাম ২,০০০ টাকা, ১ কেজি বা তার বেশি হলে ২,২০০–২,৫০০ টাকা। প্যাকেজিং ও বেনাপোল পর্যন্ত পরিবহণ খরচ মিলিয়ে কেজিতে আরও ১০০–১৩০ টাকা বাড়ে। বাণিজ্য মন্ত্রকের নির্ধারিত রপ্তানি মূল্য ১২.৫ ডলার (প্রায় ১,৫২৫ টাকা) হওয়ায় বড় লোকসানের আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহ হারাচ্ছে।
বর্তমানে বরিশালের মোকামে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৯০০ গ্রামের জন্য ৮০ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রামের জন্য ৬৪ হাজার, ১ কেজির জন্য ৯২ হাজার এবং ১,২০০ গ্রামের জন্য ৯৭ হাজার। রপ্তানি মূল্যের তুলনায় অভ্যন্তরীণ বাজারের উচ্চ দাম ব্যবসায়ীদের ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহ হারানোর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
