রাজ্য – শারদীয়া দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে বাংলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বড় ধরনের বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তর বঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে, আর দক্ষিণ বঙ্গে মেঘলা আকাশের মধ্যে স্থানীয়ভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা উত্তর বঙ্গে ২৮–৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দক্ষিণ বঙ্গে ২৭–৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া অনুভূত হবে, তবে ঝোড়ো হাওয়া বা বজ্রপাতের কোনো বড় সতর্কতা আজ জারি হয়নি। আয়োজকদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে (দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা) দিনের বেলা মেঘলা আকাশ থাকবে এবং স্থানীয়ভাবে হালকা বৃষ্টি বা মৃদুমন্দ বাতাস থাকতে পারে। আইএমডি-র রিপোর্ট অনুসারে, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত বেশিরভাগ জেলায় মেঘলা আকাশ এবং স্থানীয় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০–৩২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৫–২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। হিমালয়ান অঞ্চলে হালকা কুয়াশা দেখা দিতে পারে, যা পরিবহনকে প্রভাবিত করতে পারে। বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকায় বাইরে থাকার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ বঙ্গে (কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া) আজ মেঘলা আকাশের সঙ্গে স্থানীয় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতায় দিনের বেলা আংশিক সূর্যালোক দেখা দিতে পারে, তবে বিকেল বা সন্ধ্যায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। আর্দ্রতা ৭৫–৮৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ১০–১৫ কিমি/ঘণ্টা থাকবে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি, যা ৩০–৪০ কিমি/ঘণ্টা বেগের ঝোড়ো হাওয়া আনতে পারে।
বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি ঘূর্ণিপাক তৈরি হচ্ছে, যা ১ অক্টোবর থেকে লো প্রেসার এরিয়ায় রূপান্তরিত হবে। এর ফলে অষ্টমী-নবমীতে (২–৩ অক্টোবর) দক্ষিণ বঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। তবে সপ্তমীতে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় অষ্টমী-নবমী পর্যন্ত পুজোর উৎসব অব্যাহত রাখা সম্ভব।
আয়োজকদের জন্য পরামর্শ রয়েছে, প্যান্ডেল ও প্রসেশনের জন্য ছাতা, রেইনকোট এবং জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখার। ইতিমধ্যেই কলকাতার বেলঘরিয়া, হাওড়া ব্রিজ এবং দক্ষিণ বঙ্গে হাজার হাজার ভক্ত মা দুর্গার দর্শন করছেন। উত্তর বঙ্গের শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতেও স্থানীয় উৎসব চলছে, যদিও মেঘলা আকাশ আলোকসজ্জাকে কিছুটা প্রভাবিত করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গোপসাগরের এই ঘূর্ণিপাক মনসুনের অবশিষ্টাংশ, যা অক্টোবরের শুরুতে দক্ষিণ বঙ্গে ১১টি জেলায় ভারী বৃষ্টি আনতে পারে। আইএমডি-র পরামর্শ অনুযায়ী, বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা সঙ্গে রাখা, বজ্রপাত এড়াতে গাছতলায় না দাঁড়ানো এবং পথচারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। দুর্গাপুজোর এই পবিত্র দিনে মা দুর্গার আশীর্বাদে আবহাওয়া অনুকূল থাকুক—এটাই সকলের প্রার্থনা।
