বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির দুর্গাপুজো: প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতির সেতুবন্ধন

বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির দুর্গাপুজো: প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতির সেতুবন্ধন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



পুজো – দূরে থাকলেও উৎসব বাঙালির আবেগে সবসময় মিশে থাকে বাংলার ঘ্রাণ। সেই আবেগেরই প্রতিফলন দেখা গেল বেঙ্গালুরুর হিন্দুস্থান এরোনটিক এলাকায় পালবাড়ির দুর্গাপুজোয়। এখানে মায়ের প্রতিমা আসে কলকাতা থেকে, সঙ্গে থাকে বাংলার মাটির সুবাস মেখে আনা উপাচার। এই সুবাসে একত্রিত হন শুধু বাঙালিরাই নয়, ভিনরাজ্যের মানুষজনও।

মহালয়া থেকেই শুরু হয় পুজোর রীতি-রেওয়াজ। ঐতিহ্য মেনে কলকাতার ব্রাহ্মণই পুজো পরিচালনা করেন। খাওয়া-দাওয়ায় থাকে মিষ্টি, হালুয়া, লুচি-আলুর দম থেকে শুরু করে খিচুড়ি—সবেতেই বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। পাল পরিবারের কর্তা সীতাংশুশেখর পাল জানান, নতুন প্রজন্ম বাংলা পড়তে না জানলেও ঢাকের শব্দ, মায়ের আরাধনা আর ভোগ খাওয়ার মাধ্যমে তারা নিজেদের শিকড়কে চিনতে শেখে।

শুধু পুজো নয়, প্রতিদিনের আড্ডা, গান, আবৃত্তি, নাটক এই মণ্ডপকে পরিণত করে এক অস্থায়ী “বাঙালি পাঠশালায়”। শিশু-কিশোররা এখানেই পরিচিত হয় বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে। ফলে এই দুর্গোৎসব আর কেবল বাঙালিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। কানাড়া, তামিল, মারাঠি পরিবারও সমান উৎসাহে যোগ দেন। অ-বাঙালিরা উপভোগ করেন ভোগের স্বাদ আর সানাই-ঢাকের সুরে মাতেন সমানভাবে।

এই পুজোর সূচনা হয়েছিল শিতাংশু বাবুর কন্যা রোজি পালের হাত ধরে। তিনি জানান, “বাংলায় আমাদের সময় মেয়েরা আয়োজনের বাইরে থাকত, কিন্তু প্রবাসে এসে দেখেছি নারীরাই আসল উদ্যোক্তা। রান্না থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান—সব জায়গায় তাদের অংশগ্রহণেই প্রাণ পায় এই পুজো।”

ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়াও। বিদেশে কিংবা কলকাতায় থাকা আত্মীয়রা ভিডিও কলে প্রতিমা দর্শন করেন, আবার ঢাক-ঢোল, সানাইয়ের সুর লাইভস্ট্রিম হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে হাজারো মানুষ ভার্চুয়ালি উপভোগ করেন এই উৎসব।

এক অতিথি হাসতে হাসতে বলেন, “এখানে ঢুকলেই মনে হয় আমি বেঙ্গালুরু নয়, কলকাতাতেই আছি।”

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top