বিহার – দীর্ঘ নাটকীয়তার পর অবশেষে আজই বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার, ৬ অক্টোবর বিকেল ৪টেয় রাজধানী দিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে এই ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশনার। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা—বিহারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ছট পুজোর পরপরই শুরু হবে ভোটযুদ্ধ। সূত্রের খবর, অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।
গত কয়েক মাস ধরেই বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছিল। ভুয়ো ভোটার শনাক্ত করতে নির্বাচন কমিশন চালায় SIR বা বিশেষ নিবিড় ভোটার সংশোধনী পরীক্ষা, যার মাধ্যমে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভুয়ো ভোটার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় প্রবল তর্ক-বিতর্ক। বিরোধী দলগুলি কমিশনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়, অভিযোগ তোলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে।
তবুও নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। আজ সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, কমিশনার বিকেল ৪টেয় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন সূচি প্রকাশ করবেন। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছিলেন, বিহারের ২৪৩টি আসনের নির্বাচন ২২ নভেম্বরের আগেই সম্পন্ন করতে হবে, কারণ সেদিনই বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলির দাবি ছিল—ছট পুজো শেষ হলেই নির্বাচন করা হোক। কারণ এই সময় বহু মানুষ, যারা অন্য রাজ্যে কর্মরত, তাঁরা উৎসব উপলক্ষে বাড়ি ফেরেন। ফলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক অনুমান, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকেই শুরু হতে পারে নির্বাচনী পর্ব।
একই সাংবাদিক সম্মেলনে জ্ঞানেশ কুমার আরও জানান, এবার থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সর্বাধিক ১,২০০ জন ভোটার বরাদ্দ থাকবে। পাশাপাশি, ভোটার স্লিপে প্রার্থীদের ছবি রঙিন আকারে দেওয়া হবে—আগের মতো সাদা-কালো নয়।
বিরোধীদের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার সংশোধন জরুরি। ভোটের পর পুনর্বিবেচনা আইনত সম্ভব নয়। সফলভাবে SIR প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আমি বিহারের মানুষদের ধন্যবাদ জানাই।” তাঁর আহ্বান, “ছট পুজোর মতোই এই গণতন্ত্রের উৎসবও বিহারের মানুষ যেন উৎসাহের সঙ্গে পালন করেন।”
উল্লেখযোগ্য, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও তিন দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। এবার সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই কমিশন আরও সুশৃঙ্খল ও অংশগ্রহণমূলক ভোট আয়োজনের দিকে নজর দিচ্ছে।
