কলকাতা – বন্যা ও ধসে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের দুর্গতদের সাহায্যের জন্য রাজ্যজুড়ে ত্রাণ সংগ্রহে নেমেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর সেই ত্রাণ সংগ্রহ ঘিরেই রবিবার সন্ধ্যায় ভাঙড়ে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অভিযোগ, ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সিপিএমের একাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার জন্য সরাসরি তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে সিপিএম।
রবিবার সন্ধ্যায় ভাঙড়ের পাকাপোল বাজারে ত্রাণ সংগ্রহ করছিলেন সিপিএম নেতা পলাশ গঙ্গোপাধ্যায়, তরিকুল ইসলাম, নুর মহম্মদ মোল্লা-সহ আরও কয়েকজন কর্মী। অভিযোগ, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা খাইরুল ইসলামের কার্যালয়ের সামনেই তাঁরা ত্রাণ সংগ্রহ করছিলেন। সেই সময় খাইরুল ইসলামের অনুগামী কয়েকজন এসে সিপিএম নেতাদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেওয়া হয় এবং পরে কিল-ঘুষি মারা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে পোলেরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সোনারপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের দেখতে হাসপাতালে পৌঁছান সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতাল থেকেই ক্ষোভ উগরে দেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বাংলায় এখন জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। ত্রাণ সংগ্রহ করতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। কেন এখানে লাল ঝান্ডা থাকবে, সেই কারণেই হামলা চালানো হয়েছে। সাত-আটজন গুরুতর আহত, কাউকে মাটিতে ফেলে লাথিও মারা হয়েছে। বাংলাকে আর ধ্বংস করতে কী বাকি রইল?”
অন্যদিকে, সিপিএমের অভিযোগ অস্বীকার করেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি সবে শুনেছি, খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে প্রশ্ন হল, এই পয়সা তোলা অভ্যাসটা কি বন্ধ হবে না? যাদের হাজার হাজার কোটি টাকার ফান্ড আছে, তারা কৌটা নিয়ে বেরোচ্ছে, এরপর বিজেপিও সেই পথেই হাঁটছে। বাংলার মানুষকে ভিক্ষা দিতে দিতে ফকির বানিয়ে দেবে এরা।” যদিও শেষে তিনি স্বীকার করেন, “যদি সত্যিই মারধর করা হয়ে থাকে, সেটা ঠিক হয়নি।”
উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া ত্রাণ সংগ্রহের এই ঘটনায় ফের মুখোমুখি রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি—তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
