দেওয়াল চাপা পড়ে স্ত্রীর মৃত্যুর তিন মাস পরও প্লাস্টিকের তলায় বসবাস শবর পরিবার

দেওয়াল চাপা পড়ে স্ত্রীর মৃত্যুর তিন মাস পরও প্লাস্টিকের তলায় বসবাস শবর পরিবার

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram


পুরুলিয়া- তিন মাস কেটে গেলেও জীবনের অন্ধকার থেকে বেরোতে পারেননি পুরুলিয়ার শবর পরিবার। প্রতিদিন কাজ সেরে ফিরে এসে অসহায় বাবা দলু শবর তাঁর ছোট মেয়েকে নিয়ে যান সেই জায়গাটিতেই—যেখানে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর স্ত্রী বিনতি শবরের। সেই বেদনাময় জায়গাতেই এখন তাঁদের স্মৃতি আর বেঁচে থাকার সংগ্রাম। চলতি বছরের ১৫ জুলাই রাতে প্রবল বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিনজনের—বিনতি শবর (৪০), রিমঝিম শবর (২৫) এবং অমিত তাঁতি (৩০)। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছিলেন দলু শবর, তাঁর ছেলে মানিক এবং মানিকের মেয়ে জবা।

ঘটনার পর প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে পুনর্গঠনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতির বাস্তব চিত্র করুণ—দেহ সৎকারের জন্য কিছু টাকা, সামান্য চাল, কয়েকটি কুমড়ো আর দু’টি প্লাস্টিক ছাড়া কিছুই মেলেনি। সেই প্লাস্টিকের তলাতেই এখন পাঁচজনের বসবাস। পুরুলিয়ার টামনা থানার খেরবন গ্রামের এই পরিবার আজও কোনও সরকারি সাহায্য পায়নি। যে ভিটেতে তাঁদের বাড়ি চাপা পড়েছিল, তার থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরে প্লাস্টিকের আশ্রয়ে চলছে তাঁদের জীবন।

প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, এই ঘটনাই প্রমাণ করে রাজ্যে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। দলের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “আবাস যোজনার প্রকৃত সুবিধা দরিদ্রদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। শহরে যাঁদের ঘর আছে, তাঁরা টাকার সাহায্যে দোতলা বাড়ি তৈরি করছেন, আর গ্রামের মানুষ প্লাস্টিকের তলায় দিন কাটাচ্ছেন।” অন্যদিকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি শুসেন মাঝি জানিয়েছেন, “প্রশাসনকে জানানো হবে যাতে ওই পরিবারের স্থায়ী ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়।” কিন্তু ততদিন পর্যন্ত বৃষ্টি-রোদে সেই প্লাস্টিকের তলাতেই কাটছে শবর পরিবারের প্রতিটি দিন।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top