আদরের ছলে চাঞ্চল্যকর শিশু চুরি, স্থানীয়দের তৎপরতায় উদ্ধার বর্ধমানে

আদরের ছলে চাঞ্চল্যকর শিশু চুরি, স্থানীয়দের তৎপরতায় উদ্ধার বর্ধমানে

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



বর্ধমান – আদর করার অজুহাতে হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় সমগ্র হাসপাতাল চত্বরে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় ও পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া ১৮ দিনের শিশুপুত্র। এই ঘটনায় জড়িত দুই মহিলা—রিঙ্কি খাতুন ওরফে রুমকি খাতুন এবং তাঁর মা মিনিরা বিবিকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। রিঙ্কির বাড়ি বর্ধমানের বিজয়রাম এলাকায় এবং মিনিরা বিবির বাড়ি কেষ্টপুরে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটিকে আউটডোরে দেখাতে নিয়ে এসেছিলেন তার মা সেলেফা খাতুন। প্রসূতি বিভাগের বহিঃবিভাগের বারান্দায় তিনি মায়ের সঙ্গে শিশুটিকে নিয়ে বসেছিলেন। সেই সময় হলুদ রঙের চুড়িদার পরিহিত এক মহিলা তাঁদের কাছে এসে শিশুটিকে আদর করার কথা বলে কোলে নেয়। আচমকাই ওই মহিলা শিশুটিকে নিয়ে চম্পট দেয়, মুহূর্তের মধ্যেই উধাও হয়ে যায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে।

ঘটনার খবর ছড়াতেই তদন্তে নামে বর্ধমান থানার পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হওয়ার পর সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। খাগড়াগড়ের উত্তরপাড়ায় রিঙ্কি খাতুনের ভাড়া বাড়িতে তাঁরা গিয়ে দেখেন রিঙ্কির কোলে একটি শিশু। তাঁরা জানতে পারেন, রিঙ্কি ও তাঁর মা দাবি করছেন শিশুটি তাঁদেরই সদ্যোজাত সন্তান। কিন্তু প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়—কারণ, একদিনের বাচ্চা এত বড় হতে পারে না, আর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এত দ্রুত ছুটিও মেলে না।

স্থানীয় নাজমা খাতুন, যিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং বিভাগের প্রশিক্ষণার্থী, শিশুটিকে দেখেই সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনিই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মা ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর রিঙ্কি ও মিনিরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেন। তাঁরা জানান, হাসপাতাল থেকেই শিশুটিকে চুরি করেছেন।

রাতেই শিশুটিকে ফের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়। শিশুটির বাবা সুজল শেখ পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম আমাদের সন্তানকে হয়তো আর ফিরে পাব না, কিন্তু পুলিশের জন্যই সম্ভব হয়েছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, কেন এবং কী উদ্দেশ্যে শিশুটিকে চুরি করা হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনিরা বিবি এলাকার পরিচারিকার কাজ করেন এবং মেয়ে রিঙ্কি খাতুন কয়েক মাস আগে ভাড়া বাড়িতে এসেছেন। বর্তমানে মা-মেয়েকে আদালতে তোলা হবে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top