পূর্ব মেদিনীপুর – পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে এক তরুণী মহিলা চিকিৎসকের রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার দুপুরে শালগাছিয়া এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতা শালিনী দাস (৩২) পেশায় ছিলেন অ্যানেস্থেসিস্ট চিকিৎসক। দমদমের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই তমলুকে বসবাস করছিলেন। গত তিন মাস ধরে তিনি কাঁথি সাব-ডিভিশন হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। এর আগে এমবিবিএস পাশের পর শিক্ষানবিশ হিসাবে প্রায় দু’বছর তমলুক জেলা হাসপাতালে কাজ করেছেন। পাশাপাশি তমলুক ও মহিষাদলের একাধিক নার্সিংহোমের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। পেশাগত কারণে হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন মহকুমা শাসকের অফিসের কাছে একটি বাড়িতে মা কবিতা দাসের সঙ্গে ভাড়ায় থাকতেন।
শুক্রবার সকালে, শালিনী প্রথমে মহিষাদলের এক নার্সিংহোমে অপারেশনের কাজে যান। এরপর তমলুকের আরেক নার্সিংহোমে পৌঁছে অপারেশন থিয়েটারে কাজ শুরু করেন। সেই সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে সহকর্মী চিকিৎসকদের পরামর্শে হাতে চ্যানেল করে ইনজেকশন নেন। খানিকটা সুস্থ বোধ করায় দুপুর নাগাদ তিনি সোজা বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়ি এসে বাথরুমে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ির পরিচারিকা তাঁকে বাথরুমের বাইরে রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকারে ছুটে আসেন তাঁর মা। দ্রুত তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শালিনীকে মৃত ঘোষণা করেন।
শালিনীর মা কান্নাভেজা কণ্ঠে জানান, “সকালে মেয়ে একদম সুস্থ ছিল। বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বাথরুমের সামনে ওর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখি। তখনও ওর হাতে চ্যানেল ছিল।”
তমলুকের এক নার্সিংহোমের মালিক রাধানাথ পাল বলেন, “ওই চিকিৎসককে সকালে একদম স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল। কিন্তু অপারেশনের সময় হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় সামান্য চিকিৎসা করা হয়েছিল। ব্যস্ততার মাঝেও তাঁকে ফোনে ঘন ঘন কথা বলতে দেখা যায়। কিন্তু বাড়ি ফিরে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।”
চিকিৎসকের অকাল মৃত্যুতে সহকর্মী মহল ও চিকিৎসা মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার ও প্রশাসন।
