উত্তর 24 পরগণা – উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের ভেটকিয়া গ্রামে এক নৃশংস ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, পণের জন্য অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে স্বামী জামিরুল গাজি তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেশমা খাতুনের গর্ভে থাকা সন্তানকে হত্যা করেছেন। মৃত ভ্রূণ মাটির নিচে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় দেড় বছর পর আদালতের নির্দেশে শুক্রবার পুলিশ মাটি খুঁড়ে ভ্রূণ উদ্ধার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রেশমার সঙ্গে এলাকারই জামিরুল গাজির বিয়ে হয়েছিল। বিয়েতে এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকার পণ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিয়ের পর রেশমার এক কন্যাসন্তান জন্ম নেন। কিছু বছর পর জামিরুল শ্বশুরবাড়ির কাছে চাকরির নাম করে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। সংসারে অভাবের কারণে রেশমা ধীরে ধীরে টাকা জোগাড় করতে না পারায় স্বামীর অত্যাচার শুরু হয়। পরে রেশমার বাবা ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা না মেলায়, অভিযোগ, তখন নৃশংসতা আরও বেড়ে যায়।
রেশমা অভিযোগ করেন, “আমার গর্ভস্থ সন্তানকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওষুধ খাইয়ে হত্যা করা হয়। পরে মৃত ভ্রূণ মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়।” ঘটনার পর রেশমাকে মারধর করে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাপের বাড়িতে পৌঁছে দেন। রেশমা হিঙ্গলগঞ্জ থানায় গিয়ে সন্তানহত্যা, গর্ভপাত ও পণ-অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করেন।
হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই জামিরুল গাজিকে গ্রেফতার করেছে। আদালতের নির্দেশে তাঁকে ছয়দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এই সময় ভ্রূণ পুঁতে রাখার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। জামিরুল অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “স্ত্রীকে কখনও মারিনি, উল্টো তার অন্য সম্পর্ক নিয়ে সমস্যা হয়েছিল।”
পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে শিশুর মৃত্যুর প্রকৃতি ও সময় স্পষ্ট হবে। আপাতত সন্তানহত্যার ধারায় তদন্ত চলছে।”
