আলিপুরদুয়ার – অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের জেলা হাসপাতালে। মর্গ থেকে বদলে গেল মৃতদেহ! ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল ও পুলিশের গাফিলতিতেই এই বিভ্রাট ঘটেছে।
ঘটনাটি কুমারগ্রাম ব্লকের কামাখ্যাগুড়ি এলাকার। মৃত ব্যক্তির নাম রবীন্দ্র দাস (৪৫), পেশায় হোটেলকর্মী। তিনি কামাখ্যাগুড়ি সুপার মার্কেট এলাকায় থাকতেন। সম্প্রতি অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার সকালে কামাখ্যাগুড়ি আউট পোস্টের পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
কিন্তু এখানেই ঘটে বিভ্রাট। ময়নাতদন্ত শেষে দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে এসে প্লাস্টিক মোড়া দেহের মুখ খোলার পরই পরিবার আঁতকে ওঠে — সেটি রবীন্দ্র দাসের দেহ নয়!
পরিবার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও পুলিশকে খবর দেয়। শুরু হয় হইচই ও চাপানউতোর। পরিবারের অভিযোগ, “দেহ দেওয়ার আগে পুলিশ বা হাসপাতাল কেউই সঠিকভাবে যাচাই করেনি। যে দেহটি দেওয়া হয়েছে, সেটা আমাদের আত্মীয়ের নয়।”
এই ঘটনার পর কুমারগ্রাম থানার পুলিশ ফের হাসপাতালে যায়। জানা গিয়েছে, রবীন্দ্র দাসের দেহ ভুলবশত ফালাকাটার এক স্বজনহারা পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, এবং তাঁদের মৃত আত্মীয়ের দেহ চলে গিয়েছিল রবীন্দ্র দাসের বাড়িতে।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল — অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ভুল দেহ ইতিমধ্যেই দাহও করা হয়েছে। ফলে, এখন রবীন্দ্র দাসের প্রকৃত দেহ উদ্ধার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঘটনায় পুলিশের দ্রুততা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, “দেহটি কার, সেটি যাচাই না করেই সৎকারের অনুমতি দিয়ে দিয়েছিল পুলিশ।”
রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও আধঘণ্টার মধ্যে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরে দেখা গেল সেটি আসল দেহ নয়! এটা প্রশাসনের গাফিলতি নয়, আরও বড় কিছু।”
হাসপাতাল প্রশাসন ও পুলিশ এখন ঘটনার দায় এড়াতে একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে দেহ হস্তান্তরের সময় ভুলবশত এই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে, বিরোধীরা দাবি তুলেছেন, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে অব্যবস্থা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্যই এই ধরনের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটছে।
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মর্গের কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।




















