দিল্লি – ছত্তীসগড়ের বিলাসপুরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও বহু যাত্রী, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বিলাসপুর স্টেশনের কাছে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় যাত্রীবাহী ট্রেনটির (ডেমু) লাল সিগন্যাল অমান্য করার কারণে।
রেলওয়ে বোর্ডের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিলাসপুর থেকে করবা গেভরা যাচ্ছিল ওই ডেমু (Diesel Electric Multiple Unit) ট্রেনটি। মাঝপথে গাতোরা ও বিলাসপুর স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় সেটি একটি মালগাড়ির পেছনে গিয়ে জোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কার তীব্র অভিঘাতে ডেমুর কয়েকটি কামরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘটনাস্থলেই বহু যাত্রীর মৃত্যু ঘটে।
দুর্ঘটনার পর রেললাইনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ধ্বংসাবশেষ ও আহত যাত্রীদের আর্তনাদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা একাধিক ভিডিওতে ট্র্যাকের উপর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় (ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়নি)। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরপরই রেল প্রশাসন উদ্ধারকাজে নামে। উচ্চপদস্থ রেলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। রেলওয়ে বোর্ড মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ৫ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
বিলাসপুর, চাঁপা, রায়গড়, পেন্দ্রা রোড, করবা ও উস্লাপুরে চালু করা হয়েছে জরুরি যোগাযোগ নম্বর, যাতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রী ও তাঁদের আত্মীয়রা দ্রুত সহায়তা পেতে পারেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সবরকম সহযোগিতা করা হবে।
রেলওয়ে বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির (CRS) নেতৃত্বে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। লাল সিগন্যাল অমান্য করার বিষয়টি কতটা দায়ী, তা খতিয়ে দেখা হবে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানিয়েছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে নতুন নির্দেশিকা প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনা চলছে।



















