বিদেশ – নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ইতিহাস গড়লেন ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে তিনি শুধু শহরের কনিষ্ঠতম মেয়রই নন, তিনিই নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র। ঐতিহাসিক এই জয়ের পর সমাজমাধ্যমে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় মামদানি বলেন, “একসঙ্গে আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি। এবার কাজে নামার সময়। আগামী ১ জানুয়ারি নববর্ষের দিন আমি মেয়র পদে শপথ নেব, যা হবে নিউ ইয়র্কের নতুন যুগের সূচনা।”
নিজের এক্স (X) হ্যান্ডলে পোস্ট করা ভিডিও বার্তায় মামদানি জানিয়েছেন, তিনি প্রচারের সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করবেন। শহরের জটিল সমস্যা যেমন আবাসন সংকট, জীবিকার চ্যালেঞ্জ ও জনপরিবহন—সবকিছুতেই তিনি সততা ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
নির্বাচনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে ছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থিত কুর্টিস স্লিওয়া এবং ডেমোক্র্যাট দলেরই প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো। সূত্রের খবর, মামদানি পেয়েছেন ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট, অ্যান্ড্রু পেয়েছেন প্রায় ৪১ শতাংশ ভোট, আর কুর্টিস স্লিওয়ার প্রাপ্ত ভোট ১০ শতাংশেরও কম।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মামদানির পারিবারিক পটভূমিও সমানভাবে অনুপ্রেরণাদায়ক। উগান্ডার কাম্পালায় জন্মগ্রহণ করা জোহরানের বাবা বিখ্যাত লেখক মাহমুদ মামদানি, যিনি মুম্বইয়ে জন্মেছিলেন। তাঁর মা হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র পরিচালক মীরা নায়ার। জন্মের পরপরই মামদানি নিউ ইয়র্কে চলে আসেন এবং বর্তমানে কুইন্স অঞ্চলের বাসিন্দা।
কুইন্সে প্রচুর বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী থাকেন। সেই কারণেই মামদানি বাংলা ভাষাও শিখেছেন। নির্বাচনী প্রচারে তাঁকে একাধিকবার বাংলায় কথা বলতে দেখা গিয়েছে। তাঁর প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল—“সস্তায় খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান”—যা তিনি নিউ ইয়র্কবাসীর প্রতি অঙ্গীকার হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সব মিলিয়ে, জোহরান মামদানির জয় শুধু রাজনৈতিক সাফল্য নয়, এটি নিউ ইয়র্কের বহুসংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি ও এক নতুন পরিবর্তনের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



















