রাজ্য – রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই মঙ্গলবার থেকে বাড়ি বাড়ি অভিযান শুরু করেছেন বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO)। তাঁদের মূল দায়িত্ব—ভোটারদের দিয়ে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করানো। নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছিল, এই ফর্ম অনলাইনেও পূরণ করা যাবে। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে শুরুর দিন তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই অনলাইন ফর্ম ফিল-আপের ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চালু হয়েছে এই পরিষেবা। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা বিএলওদের কাছ থেকে সরাসরি ফর্ম সংগ্রহ করতে পারছেন না, তাঁরা এখন অনলাইনেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে পারবেন।
কোথায় মিলবে ফর্ম?
https://ceowestbengal.wb.gov.in/ এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে অনলাইন এনুমারেশন ফর্ম। পাশাপাশি কমিশনের ইসিআইনেট (ECI-Net) অ্যাপ থেকেও ফর্ম পূরণের সুযোগ থাকবে।
কারা পূরণ করতে পারবেন?
মূলত যাঁরা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকেন বা বিএলওদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্যই এই অনলাইন ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এতে সময় ও শ্রম দুই-ই সাশ্রয় হবে।
কীভাবে পূরণ করবেন ফর্মটি?
কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ভোটারদের প্রথমে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। অফলাইনের মতোই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হবে। এরপর নির্দেশিকা মেনে সেই ফর্ম আপলোড করতে হবে।
গত মঙ্গলবার থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু হওয়ার কথা থাকলেও প্রযুক্তিগত জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এই ডিজিটাল পরিষেবা চালু হয়েছে, যা ভোটারদের কাছে বিশেষ স্বস্তির বার্তা।
বর্তমানে রাজ্যজুড়ে মোট ৮০,৬৮১ জন বিএলও মাঠে কাজ করছেন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন অতিরিক্ত ১৪ হাজার কর্মী। ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র মিলিয়ে ভোটারদের হাতে পৌঁছবে ৭ কোটি ৬৬ লক্ষেরও বেশি এনুমারেশন ফর্ম। কমিশন জানিয়েছে, ফর্মের পর্যাপ্ত যোগান নিশ্চিত করতে দ্বিগুণ সংখ্যায় ফর্ম ছাপানো হয়েছে।
আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএলওরা প্রতিটি বাড়িতে অন্তত একাধিকবার যাবেন। কেউ বাড়িতে না থাকলে তাঁরা পুনরায় আসবেন—প্রয়োজনে তিন থেকে চারবার পর্যন্ত। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা।
যাঁরা ফর্ম ফিল-আপ করেছেন, তাঁদের নাম সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে যাঁদের তথ্য বা পরিবারের কারও নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলেনি, তাঁদের নোটিস পাঠানো হবে যাচাইয়ের জন্য। অন্যদিকে, যাঁরা কোনো কারণে ফর্ম পূরণ করতে পারেননি, তাঁরা এই সময় অভিযোগ জানাতে পারবেন না। এই পর্যায়েই প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে হবে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের।
সব মিলিয়ে, অফলাইন ও অনলাইন—দুই মাধ্যমেই ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ এখন পূর্ণ গতিতে এগোচ্ছে গোটা রাজ্যজুড়ে।



















