স্বাস্থ্য – প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হচ্ছে ওষুধের অতিরিক্ত সেবন বা ওভারডোজের কারণে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান এমনই উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছে। ২০২৩ সালে প্রতিদিন গড়ে দু’জন করে মানুষ ওষুধের অতি-সেবনে প্রাণ হারিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট কয়েকটি রাজ্যে এই মৃত্যুহার ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাব ও রাজস্থান।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশে ওষুধের ওভারডোজে মৃত্যু হয়েছে ৩,০০০ জনেরও বেশি মানুষের। এই হিসাব শুধুমাত্র সরকারি নথিবদ্ধ ঘটনার উপর নির্ভরশীল। বেসরকারি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এনসিআরবি-র প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে জানায়নি, এই মৃত্যু কোন ধরনের ওষুধের অতিরিক্ত সেবনের ফলে ঘটেছে — নেশাজাতীয় উপাদানযুক্ত ওষুধ নাকি সাধারণ প্রেসক্রিপশন ওষুধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেনকিলার বা ঘুমের ওষুধের অতিরিক্ত সেবনই এই মৃত্যুর নেপথ্যে থাকে। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, এই ওভারডোজ অনেক সময় ইচ্ছাকৃত হয়, আবার কখনও তা সম্পূর্ণ আকস্মিকভাবেও ঘটতে পারে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেই ওষুধের অতিরিক্ত সেবনের প্রবণতা ক্রমে বাড়ছে। প্রেসক্রিপশন ওষুধের মধ্যে যেগুলির অপব্যবহার বেশি হয়, সেগুলির মধ্যে রয়েছে ওপিওয়েড পেনকিলার, অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ওষুধ, সিডেটিভ এবং স্টিমুল্যান্ট জাতীয় ওষুধ। এনসিআরবি-র রিপোর্টে আরও জানা যায়, ২০২০ সালে ওভারডোজজনিত মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর প্রধান কারণ ছিল কোভিড মহামারির সময়কাল। তবে ২০২১ সালেই তা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পায়, সে বছর মৃত্যু হয় ৭৩৭ জনের। প্রথমদিকে এই ধরনের ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি ছিল তামিলনাড়ুতে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাব ও রাজস্থান এগিয়ে যায়।
ওষুধের অতি-সেবনে মৃত্যুর এই বাড়ন্ত প্রবণতা এখন জাতীয় স্তরে এক গভীর স্বাস্থ্য সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপ, সহজলভ্য প্রেসক্রিপশন ওষুধ এবং সচেতনতার অভাবই এই বিপজ্জনক প্রবণতার অন্যতম কারণ।




















