দিল্লি – সোমবার ফরিদাবাদ থেকে বড় পরিসরে বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার এবং এরপর সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লা কাছে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পর্ক কাটাছেঁড়া করে তদন্ত চলছে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ ও হরিয়ানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ফরিদাবাদের একটি বাড়ি থেকে প্রথমে উদ্ধার করা হয় ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, একটি অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তলসহ প্রচুর গোলাবারুদ। পরে একই এলাকায় আরেকটি বাড়ি তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় আরও ২,৫৬৩ কেজি বিস্ফোরক। সমগ্র অভিযানে মোট প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরকের সন্ধান মিলেছে, যা আইইডি তৈরির উপকরণ হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তল্লাশি ও অভিযানে দুই ‘জঙ্গি’ চিকিৎসকসহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের সূত্রে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট—যা বিস্ফোরক তৈরির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে—একটি সংগঠিত চক্রের অংশ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। গ্রেফতারদের মধ্যে ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিলের নাম উচ্চারিত হচ্ছে; তাঁর বাড়ি ফতেহপুর তাগা গ্রামে তল্লাশি চালানোর সময়ই বড় পরিমাণ বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে।
ফরিদাবাদ অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া গাড়ি বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং বহু আহত। এই বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়ির মালিককে—নাদিম খান—ফরিদাবাদ থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে নাদিম দাবি করেছেন যে তিনি গাড়িটি পুলওয়ামার এক বাসিন্দা তারিককে বিক্রি করেছিলেন; তবে আরেক দিক থেকে তদন্তকারীরা ফরিদাবাদ চক্রের যোগসূত্রকেই জরুরি অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছেন।
তদন্তকারীরা বলছেন, দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের যোগসূত্র আছে কি না — সেটাই এখন মূল প্রশ্ন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে, যদি ফরিদাবাদ চক্র ওই বিস্ফোরক মজুত বা সরবরাহ করেই থাকে, তাহলে দেশে বড়সড় নাশকতার সম্ভাব্য চেষ্টা প্রতিহত করা যেত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। ঘটনায় এনআইএ, এনএসজি, এফএসএল ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো অংশ নথে তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে।
এইসব তথ্যের আলোকে তদন্তদল ক্রমে অপরাধ-শৃঙ্খল উন্মোচনের চেষ্টা চালাচ্ছে—গাড়ি কেনাবেচার শৃঙ্খল, মালিকানার নথি, বাকীরাও কি চক্রের অংশ ছিল, এবং উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক কোথা থেকে এসেছে—এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগভুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা চালানো হচ্ছে এবং দ্রুততম সময়ে ঘটনার পেছনের জাল উন্মোচনের চেষ্টা চলছে।




















