রাজ্য – রাজভবনের অন্দরে নাকি রয়েছে বোমা ও বন্দুক—এমন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তাপ সৃষ্টি করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, এই অস্ত্র রাজভবন থেকেই বিজেপির ‘গুন্ডাদের’ হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শনিবার চুঁচুড়ায় তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ‘বাংলায় ব্যালটে ভোট হওয়া উচিত, বুলেটে নয়’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান কল্যাণ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপির ক্রিমিনালদের রাজভবনে ঢুকিয়ে প্রত্যেককে বন্দুক-বোমা দিয়ে বলছেন তৃণমূলকে মেরে আসতে।’’
কল্যাণের এই মন্তব্য ঘিরে মুহূর্তে রাজনৈতিক পারদ চড়ে যায়। রাতের মধ্যেই রাজভবন পাল্টা বিবৃতি জারি করে সাংসদের অভিযোগকে ‘মিথ্যা এবং কুরুচিকর’ বলে দাবি করে। সাথে জানানো হয়, রবিবার ভোর ৫টা থেকে রাজভবন ১০০ জনের মতো বাছাই করা সাংসদ, সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য খুলে দেওয়া হবে—যাতে তারা স্বচক্ষে দেখতে পারেন রাজভবনের ভেতরে আদৌ কোনও অস্ত্র বা গোলাবারুদ রয়েছে কি না। যদি অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়, তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে’ হবে বলেও জানানো হয়। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ইঙ্গিতও দিয়েছে রাজভবন। স্পিকারের কাছেও তদন্তের অনুরোধ জানানো হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই অভিযোগে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যপালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। রাজভবনের ভিতরে অস্ত্র থাকার অভিযোগ রাজ্যপালের ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তা এবং কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। রাজভবন বিবৃতিতে বলেছে, সত্যিই যদি কোনও অস্ত্র ভেতরে প্রবেশ করে থাকে, তা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি। তাই ঘটনার তাৎক্ষণিক তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। রাজভবনের নিরাপত্তা দফতর রাজ্যপালকে আপাতত অন্যত্র থাকার প্রস্তাব দিলেও তিনি জানিয়েছেন, ‘‘যাই ঘটুক, আমি রাজভবনেই থাকব।’’
রাজভবনের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে নতুন করে চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ, আর রাজ্য শাসনের সর্বোচ্চ ঠিকানাটি এখন বিতর্কের কেন্দ্রে।




















