ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রথম ধাপ শীঘ্রই চূড়ান্ত, শুল্ক কমানোতেই জোর দুই দেশের

ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রথম ধাপ শীঘ্রই চূড়ান্ত, শুল্ক কমানোতেই জোর দুই দেশের

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram



দেশ – ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA)-র প্রথম ধাপ খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত হতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ শুল্ক, বাজারে প্রবেশাধিকারের জটিলতা এবং বাণিজ্য বৈষম্য নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, এই চুক্তি সেই সমস্যা সমাধানের দিকেই বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সরকারের শীর্ষ স্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিশেষত মার্কিন প্রশাসনের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক সংক্রান্ত অধিকাংশ জটিলতা এখন প্রায় সমাধানের পথে, এবং প্রথম ধাপের ঘোষণা খুব দ্রুতই হতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন—যার মধ্যে ২৫ শতাংশ ছিল পাল্টা শুল্ক এবং বাকি ২৫ শতাংশ ছিল রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার ‘শাস্তিমূলক’ অতিরিক্ত শুল্ক। এতে ভারতের রফতানি কার্যত বড় ধাক্কা খায়। এখন নতুন BTA-র প্রথম ট্রাঞ্চের লক্ষ্যই হলো এই অতিরিক্ত চাপ কমানো এবং বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।

সরকারি আধিকারিকের মতে, চুক্তির দুটি মূল অংশ আছে—একটি দীর্ঘমেয়াদী ও জটিল, আরেকটি মূলত পাল্টা শুল্ককে কেন্দ্র করে, যা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “এই প্যাকেজ যদি শুল্ক সমস্যার সমাধান না করে, তাহলে চুক্তির কার্যকারিতা থাকবে না।” তাই প্রথম ধাপের কেন্দ্রবিন্দু—দুই দেশের শুল্ক কমানো এবং গত কয়েক বছরে তৈরি হওয়া বাণিজ্য উত্তেজনা কমানো।

দুই দেশ পারস্পরিকভাবে চুক্তি ঘোষণার দিন ঠিক করবে। ইতিমধ্যেই ছয় দফা আলোচনা শেষ হয়েছে। গত অক্টোবর মাসে বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়ালের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে তিন দিন ধরে মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সম্পন্ন করে।

এদিকে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি ২০২৬ সাল থেকে আমেরিকা থেকে এক বছরের জন্য এলপিজি আমদানির চুক্তি করেছে। যদিও এটি সরাসরি বাণিজ্য চুক্তির অংশ নয়, কিন্তু দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

বর্তমানে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯১ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্য—২০৩০ সালের মধ্যে তা ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় বাজারে বাদাম, পিস্তাবাদাম, আপেল, ইথানল ও জেনেটিকালি মডিফায়েড ফসলের আরও প্রবেশাধিকার চাইছে। একই সময়ে উচ্চ শুল্কের কারণে ২০২৪-২৫ সালে আমেরিকায় ভারতের রফতানি কিছুটা কমলেও আমদানি বেড়েছে, ফলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও বাড়ছে। এই পরিস্থিতি বদলাতে এবং দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে BTA-র প্রথম ধাপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top