কোচবিহার – ভারত সরকারের উদ্যোগে আশ্রয় পেয়ে সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বাংলাদেশি সাবেক ছিটের ৯৬টি পরিবার। কিন্তু মাত্র ছয় বছরেই সেই ক্যাম্পের করুণ অবস্থা চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমার হলদিবাড়ি ব্লকের মধ্য কাশিয়া বাড়ি তেঁতুলতলায় ২০১৯ সালে তৈরি হয়েছিল এই ক্যাম্প, যেখানে বর্তমানে ৬০০-র বেশি মানুষ থাকেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত ঘরগুলোর দেওয়াল খসে পড়ছে, ঘুনে ধরেছে দরজা, চৌকাঠ ভেঙে পড়েছে, অধিকাংশ ঘরের দেওয়ালে ছাতা পড়ে ড্যাম্প তৈরি হয়েছে। রঙ উঠে প্লাস্টার খসে পড়ছে, ফলে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে ঘরগুলো। বহুবার প্রশাসনকে জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি তাঁদের।
এই পরিস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক–বিরোধী রাজনৈতিক তরজা। ক্যাম্পের বাসিন্দা ভারতী রায়, যদু বর্মন, রেখা রায়সহ আরও অনেকে জানান, ভারত সরকার তাঁদের আশ্রয় দিলেও বসবাসের জন্য যে ঘর দেওয়া হয়েছে তার মান অত্যন্ত খারাপ। দাবি, মাত্র কয়েক বছরেই অস্বাস্থ্যকর ও ভগ্নদশা তৈরি হয়েছে। বিজেপির হলদিবাড়ি টাউন মন্ডলের সভাপতি প্রদীপ সরকার অভিযোগ করেন, ক্যাম্প তৈরির সময় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে এবং প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, শাসকদলের নেতাদের কাছে বারবার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং অভিযোগ তুললে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে।
অন্যদিকে, তৃণমূলের হলদিবাড়ি টাউন ব্লক সভাপতি অমিতাভ বিশ্বাস অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, সব অভিযোগই মিথ্যা। তিনি দাবি করেন, ক্যাম্প তৈরির সময় জেলা প্রশাসন ও কেন্দ্রের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। মেখলিগঞ্জের মহকুমা শাসক অতনু কুমার মণ্ডল জানান, এই ফ্ল্যাটগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে, তাই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বাসিন্দাদেরই। তবে জলপাইগুড়ির সাংসদ ডা. জয়ন্ত কুমার রায় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, তৃণমূল রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে বেহাল করে রেখেছে।




















