পূর্ব মেদিনীপুর – তৃণমূল এবং আইপ্যাক—বাংলার রাজনীতিতে এই দুই নাম প্রায় অবিচ্ছেদ্য। অথচ এবার এই সম্পর্ক নিয়েই উত্তাল তমলুক। তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থসারথি মাইতির সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। তাঁর অভিযোগ, ভোটের ফল খারাপ হলে আইপ্যাক কর্মীদের গাছে বেঁধে পেটানোই একমাত্র উপায়। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থসারথি শুধু আইপ্যাক নয়, সরাসরি পুরসভার চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতির দিকেও ক্ষোভ ঝাড়ছেন। চেয়ারম্যানকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ এবং জেলা সভাপতিকে ‘তোলাবাজ’ বলে সরাসরি আক্রমণ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, জেলা সভাপতির নেতৃত্বে ১৫ টিরও বেশি ওয়ার্ড হাতছাড়া হয়েছে, তাই দায় নিতে হবে নেতৃত্বকেই।
চেয়ারম্যান চঞ্চল খাঁড়া এই অভিযোগ গুরুত্ব না দিয়ে জানান, যে যা মনে করেছে তাই বলেছে। তিনি কেবল দল থেকে দেওয়া দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু পার্থসারথির আক্রমণ আরও বিস্তৃত—আইপ্যাকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘টাকা দিয়ে এসেছ, তোমাকে জেতাতে হবে। আমাদের কথা তো শোনোনি।’ কোন দিকে ইঙ্গিত, তা নিয়েই ঘনীভূত হচ্ছে জল্পনা।
বিজেপি এই বিতর্কে আরও ঘি ঢালছে। জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সুকান্ত চৌধুরী দাবি করেছেন, তৃণমূল এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যেখানে টাকা দিয়ে পদ পাওয়া যায়। তাই পুরসভার দায়িত্ব সামলাতে সক্ষম মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেই এমন পরিস্থিতি।
পার্থসারথি মাইতি এর আগেও বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন। এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলে তিনি শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। এমনকি দলের নেতাদের হয়ে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করেও ক্ষমা চেয়েছিলেন—যার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আইপ্যাকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা রাজনৈতিক মহলের অনেকেই স্বীকার করেন, তবে দলের ভেতরের অনেকেই শুরু থেকেই সংস্থাটি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না।
তমলুকের তৃণমূলের অন্দরে এই বিস্ফোরক মন্তব্য নতুন করে অস্বস্তি তৈরি করেছে, আর রাজনৈতিক মহল নজর রাখছে এই বিতর্ক কোন পথে গড়ায়।



















