রাজ্য – ভোরের কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর নামতে থাকা পারদ—দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে যে শীতের আভাস তৈরি হচ্ছিল, তা গত দু’দিনেই মিলিয়ে গেল। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় রাতের তাপমাত্রা হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় শীত যেন এক প্রকার পিছিয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে নতুন নিম্নচাপ তৈরির সতর্কতা আরও বাড়িয়েছে আবহাওাগত অনিশ্চয়তা।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে পারে। শনিবার তৈরি হওয়া এই আবহাওয়া ব্যবস্থা আগামী দিনে পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিক ধরে এগোবে। ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না আবহাওয়া দফতর। আইএমডি-র ভুবনেশ্বর দফতরের ডিরেক্টর মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, নিম্নচাপ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এর পরবর্তী গতিপথ নিয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।
এই সম্ভাব্য নিম্নচাপের প্রভাবে ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাজ্যে বৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ওড়িশার উপকূলীয় অঞ্চলে ধান কাটা প্রায় শেষ হলেও এখনও কোনও বিশেষ সতর্কতা জারি করেনি আবহাওয়া দফতর, কিন্তু চাষিদের উদ্বেগ বাড়ছে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, এবং নিম্নচাপ শক্তিশালী হলে দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা।
নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলায় সামান্য হলেও যে শীতের অনুভূতি তৈরি হয়েছিল, নিম্নচাপের ইঙ্গিত মিলতেই তা দ্রুত পিছিয়ে গেছে। ফলে রাতের তাপমাত্রা ফের ঊর্ধ্বমুখী। শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর শুক্রবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.২ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৪২ থেকে ৯০ শতাংশ।
আবহাওয়াবিদদের মতে, এই নিম্নচাপ পুরোপুরি কেটে না গেলে দক্ষিণবঙ্গে জমাট শীত নেমে আসা কঠিন। ফলে শীতপ্রেমীদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন—শীত কি ফিরবে, নাকি নিম্নচাপই জানান দিচ্ছে ভেজা ডিসেম্বরের?



















