দিল্লি – রেল স্টেশন, স্কুল, খেলার মাঠ ও হাসপাতাল চত্বর থেকে পথকুকুর সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এরপরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ হাতে লেখা চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতির কাছে, নির্দেশটি পুনর্বিবেচনার জন্য। জানা গেছে, শুধু দিল্লি থেকে প্রায় ১০ হাজার নাগরিক এই প্রতিবাদে অংশ নেন। ছাত্রছাত্রী, গৃহবধূ, কর্মরত মানুষ এবং প্রাণীপ্রেমীরা নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিঠির মাধ্যমে (Animal Lovers letters to CJI)।
সুপ্রিম কোর্ট ৭ নভেম্বরের নির্দেশে জানিয়েছিল, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বাস ডিপো ও রেল স্টেশন থেকে অবিলম্বে সমস্ত পথকুকুর সরিয়ে নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হোক। নির্বীজকরণ ও টিকাকরণের পরও তাদের আবার আগের জায়গায় ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।
কিন্তু এই নির্দেশ দেশে বিদ্যমান ABC Rules, 2023-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা। নিয়ম অনুযায়ী, নির্বীজকরণ ও টিকা দেওয়ার পরে কুকুরদের আবার পরিচিত এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। নতুন নির্দেশের ফলে দেশের বিভিন্ন শহরে দীর্ঘদিন ধরে চলা নিয়ম কার্যকরভাবে ব্যাহত হতে পারে।
প্রাণী অধিকার কর্মীরা এবং বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, দেশের পর্যাপ্ত এবং মানবিক আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় হঠাৎ কুকুরদের এলাকা থেকে তুলে নেওয়া মারাত্মক কষ্টের কারণ হতে পারে। এছাড়া পরিচিত, টিকাপ্রাপ্ত কুকুর না থাকলে নতুন, অপ্রশিক্ষিত ও সম্ভাব্য আগ্রাসী কুকুর এলাকা দখল করতে পারে, যা আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
দেশজুড়ে প্রতিবাদে নাগরিকদের অংশগ্রহণও নজরকাড়া। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী—প্রায় সকল প্রান্ত থেকে মানুষ পোস্টাল রিসিট শেয়ার করেছেন, যা প্রমাণ করে যে পথকুকুরদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি কতটা গভীর।
পশুপ্রেমীদের দাবি, ৭ নভেম্বরের নির্দেশ স্থগিত রাখা হোক, পুনর্বিবেচনা করা হোক এবং বিদ্যমান ABC নিয়ম কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হোক। নির্বীজকরণ, টিকাকরণ এবং নির্দিষ্ট ফিডিং জোন তৈরির মতো বিজ্ঞানভিত্তিক ও মানবিক পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদে সমাধান আনতে পারে।
উল্লেখ্য, দিল্লিতে একের পর এক পথকুকুরের কামড়ের ঘটনায় উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে স্বপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, একবার কুকুরদের সরিয়ে নেওয়ার পর তারা পুনরায় ঢোকার চেষ্টা করছে কিনা তা নজরে রাখতে হবে।




















