উত্তরবঙ্গ – রেড পান্ডার পর এবার বিলুপ্তপ্রায় হিমালয়ান নেকড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের চিন্তার ভাঁজ আরও বাড়ছে। জিনগত কারণে একই পরিবারের সদস্য পুরুষ ও স্ত্রী প্রাণীর মধ্যে সন্তান প্রজনন সমস্যাপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা। কয়েক বছর আগে একই সমস্যার কারণে দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান চিড়িয়াখানায় বংশবৃদ্ধি থমকে গিয়েছিল। তখন নেদারল্যান্ডস থেকে এক জোড়া রেড পান্ডা আনা হলে সমস্যা মিটেছিল।
এবার হিমালয়ান নেকড়ের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিড়িয়াখানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একই পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণে এখানকার হিমালয়ান নেকড়ে পরিবারে গত সাত বছর কোনো নতুন সদস্য জন্মায়নি। দেশের অন্য চিড়িয়াখানাগুলো থেকে সঙ্গী আনার চেষ্টা করেও ফলাফল মেলেনি। ফলে হিমালয়ান নেকড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ প্রবল উদ্বেগে রয়েছে।
দেশের গুনে কয়েকটি চিড়িয়াখানাতেই হিমালয়ান নেকড়ে আছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান চিড়িয়াখানা। শীতপ্রধান অঞ্চলে বসবাসকারী ‘বিপন্ন’ এই বন্যপ্রাণ প্রজাতির সংরক্ষণ কাজ এখানে চলছে। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, এখানে মাত্র চারটি হিমালয়ান নেকড়ে আছে এবং গত সাত বছর ধরে প্রজনন হয়নি। ফলে সংরক্ষণ প্রকল্পও থমকে গেছে।
১৯৯০ সালে সিমলা চিড়িয়াখানা থেকে দার্জিলিংয়ে আনা হয়েছিল এক জোড়া হিমালয়ান নেকড়ে, হীরা এবং মোতি। তাদের পরিবার এখানে ভালোভাবেই বেড়ে উঠেছিল। জন্ম নেওয়া নেকড়েগুলো দেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালের পর থেকে নতুন কোনও হিমালয়ান নেকড়ের আগমন হয়নি। প্রজননের চেষ্টা করা হলেও কোনো সফলতা মেলেনি। সিমলা, সিকিমসহ বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু সন্ধান মেলেনি।
একটি চিড়িয়াখানা আধিকারিক জানিয়েছেন, রেড পান্ডাদের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস থেকে আনা নতুন জোড়া জিনগত সমস্যা এড়াতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু হিমালয়ান নেকড়ের ক্ষেত্রে বর্তমানে থাকা নেকড়েগুলো একই পরিবারের মধ্যে প্রজনন করেছে। ফলে জিনগত সমস্যা রয়েছে। একমাত্র বাইরে থেকে হিমালয়ান নেকড়ে আনা গেলে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।



















