দেশ – ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের মাঝেই উঠে এল নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের তথ্য। রাজনৈতিক দল থেকে নাগরিক সংগঠন—সবাই আপত্তি তুলে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছে। আর সেই বিতর্কের জেরে সামনে এসেছে কমিশনের ফাইলবন্দি নথি, যেখানে শুরুতেই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বিহারে এসআইআর শুরু করার নির্দেশ জারি করার আগে খসড়া নির্দেশিকায় সান্ধু মন্তব্য করেন—বৃদ্ধ, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী, দরিদ্র ও অন্যান্য দুর্বল শ্রেণিকে যেন হয়রানির মুখে না পড়তে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কিন্তু সেই সতর্কবার্তার পরও কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার দ্রুত চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেন। এমনকী খসড়া নোট অফিসারদের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠিয়ে বিকেলেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরপরই দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের সূচনা হয়।
কমিশনার সান্ধুর সতর্কতা পরোক্ষভাবে প্রতিফলিত হয় চূড়ান্ত নির্দেশিকায়। খসড়া নির্দেশিকায় ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইনের উল্লেখ থাকলেও চূড়ান্ত নির্দেশিকায় তা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। পরিবর্তে বলা হয়—ভোটার হতে হলে নাগরিক হওয়া আবশ্যক, তাই ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনকে ভিত্তি ধরা হবে। এ সিদ্ধান্ত থেকেই পরিষ্কার হয়—কমিশনের মধ্যে অভিন্ন মত ছিল না। চূড়ান্ত নির্দেশিকার ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে একটি সেমিকোলন দিয়ে অসম্পূর্ণ বাক্য শেষ হওয়াও সেই সন্দেহ আরও জোরালো করছে।
নথি ফাঁস হওয়ায় জানা গেছে—বিরোধীদের পাশাপাশি কমিশনের এক সদস্যও এসআইআর নিয়ে তাড়াহুড়োর বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। তবু বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না কমিশনের কেউই। এমনকী সান্ধুও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন।



















