দিল্লি – রাজধানী দিল্লির অন্যতম বড় সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই যমুনা নদীর দূষণ। সরকার বদলালেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। প্রথমে আপ, তারপর বিজেপি—দুই দলই নদীকে পরিষ্কার করার দাবি তুললেও বাস্তবে দূষণ রয়ে গেছে একই জায়গায়। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচের পরও কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি—রাজ্যসভায় লিখিত চিঠিতে সেই তথ্যই জানাল কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্র জানিয়েছে, গত তিন বছরে ৫,৫৩৬ কোটি টাকা খরচ করেও যমুনার জল এখনও ভয়াবহ দূষিত। এর প্রধান কারণ প্রতিদিন ৪১৪ মিলিয়ন লিটার অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলা, শিল্পাঞ্চলে কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের অভাব, নতুন সিওয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট গঠনে দেরি এবং প্রতিদিনের ৪,২২১ টন অপরিশোধিত কঠিন বর্জ্য সরাসরি ড্রেনে গিয়ে নদীতে মিশে যাওয়া।
দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি জানিয়েছে, চলতি বছরের অগস্ট পর্যন্ত ৪১৪ মিলিয়ন লিটার বর্জ্য সঠিকভাবে পরিশোধন করা হয়নি। এগুলি ড্রেনের মাধ্যমে যমুনায় প্রবেশ করছে। শিল্পাঞ্চলের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা—কমন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট না থাকায় শিল্প বর্জ্য সরাসরি নদীতে মিশছে। নতুন STP তৈরিতে দীর্ঘসূত্রতায় এবং পুরনো প্ল্যান্ট উন্নয়নের কাজ পিছিয়ে থাকায় বর্জ্য পরিশোধনের ঘাটতি আরও গভীর হচ্ছে।
দিল্লি প্রতিদিন ১১,৮৬২ টন কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন করে, যার মধ্যে মাত্র ৭,৬৪১ টন প্রক্রিয়াজাত হয়। ফলে প্রতিদিন অব্যবহৃত ৪,২২১ টন বর্জ্য জলপথ ও নিকাশির মাধ্যমে যমুনায় গিয়ে পড়ছে। ‘নমামি গঙ্গা’ প্রকল্পের অধীনে ৬,৫৩৪ কোটি টাকার ৩৫টি প্রকল্প অনুমোদিত হলেও বর্জ্য পরিশোধনের মূল সমস্যাগুলি সমাধান না হলে নদীর দূষণ কমানো অসম্ভব বলে কেন্দ্রের মত।
যমুনা দূষণ বহুদিনের রাজনৈতিক ইস্যু। গত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আপের বিরুদ্ধে বিজেপির অন্যতম আক্রমণের জায়গা ছিল এই সমস্যা। ছট পুজোর সময় যমুনার দূষিত জলকে কেন্দ্র করে বিতর্ক আরও তীব্র হয়। অভিযোগ ওঠে, প্রধানমন্ত্রী যাতে দূষিত জলে নামতে না হয়, সেই কারণে ‘নকল’ যমুনা তৈরি করেছে বিজেপি। সেই ঘটনার বেশ কিছু ছবি তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।



















