সরকারি হাসপাতালগুলিতেও যাতে তামাকজাত দ্রব্য সেবন ছাড়ানোর ক্লিনিক বাড়ানো যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। বিভিন্ন জেলাতে যাতে আইন কড়াকড়িভাবে মানা হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ধূমপানে শুধু হার্টের সমস্যা, ফুসফুস, গলার ক্যান্সারই নয়, নষ্ট করে দিতে পারে দৃষ্টিশক্তিও। সিগারেটের নেশা যে হারে বাড়ছে তাতে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকমহল। বহু স্কুল পড়ুয়া বাবা–মায়ের চোখে ফাঁকি দিয়ে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সিগারেট খাওয়ার নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। চোখে অক্সিজেন সরবরাহকারী রক্তজালিকাগুলি সঙ্কীর্ণ হয়ে যায় সিগারেট, বিড়ি এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য সেবনের ফলে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতন করা, কাউন্সেলিংয়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে কারণ তাঁরা হাসপাতালের রোগীদের সচেতন করবেন। মেডিসিন, কার্ডিওলজি, চেস্ট বিভাগে রোগীরা গেলে তাঁদের ধূমপান ছাড়ানোর বিষয়ে বোঝানো হবে।’ সাইকিয়াট্রি বিভাগের সঙ্গে অ্যান্টি টোব্যাকো ক্লিনিক থাকলে সেখানে নেশা ছাড়াতে শুধু কাউন্সেলিং করা এবং ওষুধ দেওয়া নয়, নিকোটিন প্যাচ যাতে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় সেই বিষয়েও ভাবছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
দিশা আই হসপিটালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সোহম বসাক বলেন, ‘ধূমপায়ীদের চোখে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। দ্রুত দৃষ্টিশক্তি কমে আসে। অপটিক নার্ভে রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দিয়ে অল্প বয়সেই ডেকে আনে অন্ধত্ব। বয়সজনিত চোখের সমস্যা এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হলে রেটিনা সরু এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। সুতরাং সময় থাকতে সতর্ক হওয়া উচিত।’ চক্ষু চিকিৎসক তুহিন চৌধুরি বলেন, ‘ধূমপানের জেরে চোখে জটিল অসুখের পাশাপাশি আশঙ্কা থাকে ছানি পড়া, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, গ্লকোমা হওয়ার। বাড়ে চোখের প্রেশারও। চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। চোখে ট্র্যান্সিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক হলে হঠাৎ করেই কিছুক্ষণের জন্য দৃষ্টি হারিয়ে যায়।’ মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দিলীপ কুমার বলেন, ‘ধূমপান বর্জন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। তাহলেই জীবনযাপনের মানে অনেক উন্নতি ঘটবে। সিগারেট ছাড়ার ২–৩ মাস পর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতার উন্নতি ঘটে।’
ধূমপানে বাড়ছে চোখের সমস্যা
ধূমপানে বাড়ছে চোখের সমস্যা
Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram