নিজস্ব সংবাদদাতা, কোলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর, ৪৮তম বিজয় দিবসের আগে রবিবার(১৫ ডিসেরম্বর), ভারতীয় সেনাবাহিনির পুর্বাঞ্চল দপ্তর, কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এক্কা অ্যালবার্ট অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে ফটো প্রদর্শন হয় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরবর্তী ঘটনাগুলোকে নিয়ে। প্রদর্শনটির নাম দেওয়া হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বন্ধন।
সেখানে ফটো গ্যালারিটি সাজানো হয়েছে কয়েকটি বিভাগে। সেখানে প্রথমেই স্থান পেয়েছে ‘দ্য হিস্টোরিক মোমেন্ট অফ সারেন্ডার সেরিমনি ডিসেম্বর ১৯৭১’। সেখানে দেখানো হয়েছে পাকিস্তান সেনা একে নিয়াজী ও ভারতীয়সেনা জগজিত সিং অরোরার মুহুর্তগুলো এছাড়াও আরও কটি ভাগে ভাগ করা চিত্র প্রদর্শনীটি। সেখানে স্থান পেয়েছে পাকিস্তানী সেনা ও তাদের অস্ত্র সারেন্ডার।
এরসাথে পরপর কয়েকটি বিভাগে দেখানো হয়েছে ‘কমান্ডার ইন্টারেক্টিভ উইথ ট্রূপস’ যেখানে স্থান পেয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রেনিং নানা কথাবার্তার বৈঠকে ও যুদ্ধের নানা প্ল্যানিংয়ের আদান-প্রদানের ছবিগুলো।এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর আয়োজনে জয় বাংলা নামে একটি বিভাগ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ৭১-এর ঐতিহাসিক ভাষন সহ ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর নানা মুহুের্ত ছবি। বঙ্গবন্ধু। এরসাথে উঠে এসেছে মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিবাহিনীর তৎপরতার ছবিগুলো।
এরসাথে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘ক্যাপচার অফ ঢাকা’, ‘ক্যাপচার অফ বগুড়া’, ‘ব্যাটেল অফ টাঙ্গাইল’, ‘ব্যাটেল অফ হিলি’, ‘ব্যাটেল অফ যশোর’ ও ‘ব্যাটেল অফ দর্শনা’র নামে মুক্তিযুদ্ধে নানা মুহুের্তের ছবি ফ্রেমবন্দী করা হয়েছে ভারতীয়সেনাবাহিনির আয়োজনে।এছাড়াও আছে ৭১সালের তৎকালীন খবরের কাগজের কালেকশন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু দ্য স্টেটসম্যান, টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মত উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলি। যেখানে স্থান পেয়েছে মুক্তিবাহিনীর ঐতিহাসিক ঘটনা এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশ।
এছাড়া এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে বইগুলোর হিন্দি ও ইংলিশ ভার্সন এবং বাংলাদেশ-পাকিস্তান ভারতের মুহূর্তে ঐতিহাসিক ঘটনার বইগুলি।এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা তথা সাবেক নৌমন্ত্রীর শাহজান খানের নেতৃত্বে ৩০ জন সস্ত্রীক মুক্তিযোদ্ধ ও বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ৬ জন সেনাকর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রীরা এবং ভারতীয়সেনারা। সব মিলিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যর্থনায় ৭২ জন বাংলাদেশী এসেছেন কলকাতার সেনাছাউনি ফোর্ট উইলিয়ামে।
ফটো প্রদর্শনীর পর সাবেক মন্ত্রীসহ মুক্তিযোদ্ধরা এবং দুই দেশের সেনাবাহিনী এক আলোচনায় অংশগ্রন করেন। অতীত ও বর্তমান বাংলাদেশের নানা ঘটনা তুলে ধরেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামনে।এরপর স্মারক অাদান প্রদান হয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে। ভারতীয়সেনার পক্ষ থেকে ছিলেন ও বাংলাদেশসেনার পক্ষ থেকে ছিলেন। সবশেষে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত মধ্য দিয়ে শেষ হয় এদিনের অনুষ্ঠান।এরআগে ১৪ ডিসেম্বর ভারতীয়সেনার পক্ষ থেকে প্রিন্সেপ ঘাটে ‘মৈত্রী মিউজিক’ সেনাবাহিনীর ব্যান্ড শো আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনির আতিথিয়তা বাংলাদেশী অতিথিরা।