নয়াদিল্লি, ১৩ নভেম্বর, ২০২০:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন দিল্লিতে জেএনইউ ক্যাম্পাসে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন।প্রধানমন্ত্রী জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রী এবং দেশের যুব সম্প্রদায়কে তাঁর ভাষণে জাতীয় স্বার্থের চাইতে আদর্শকে অগ্রাধিকার দিলে কি ক্ষতি হতে পারে সেই বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এর ফলে যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়। “কারণ, আমার আদর্শ একটি ভাবনায় চলবে, আবার জাতীয় স্বার্থ অন্য ভাবনায়, আমাকে একই গণ্ডীর মধ্যে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে, আমি একই জিনিস নিয়ে কাজ করব, এই ধারণাটাই ভুল।” মোদী বলেছেন, একজন তাঁর আদর্শের বিষয়ে গর্বিত হতেই পারেন, কিন্তু একইসঙ্গে জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে আমাদের দেখতে হবে আমাদের আদর্শ যেন স্বার্থের পরিপন্থী না হয়। এই বিষয়টির ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন, দেশের ইতিহাসে যখনই সঙ্কটের সময় এসেছে, তখন দেশের স্বার্থে প্রতিটি আদর্শের মানুষ একজোট হয়েছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে সব আদর্শের মানুষ জোট বেঁধেছিলেন। তাঁরা একসঙ্গে সংগ্রাম করেছেন। দেশ এই একই সংহতি দেখেছিল জরুরি অবস্থার সময়। প্রাক্তন কংগ্রেসি নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীরা তাঁরাও জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। সেখানে আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবক এবং জনসঙ্ঘের মানুষেরাও ছিলেন। সমাজতন্ত্র ও কমিউনিস্ট ভাবধারার মানুষও একজোট হয়েছিলেন।এই সংহতির প্রতি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, কেউই তাঁর আদর্শ থেকে চ্যুত হবেন না। তবে সকলের একটি উদ্দেশ্য থাকতে হবে – জাতীয় স্বার্থ। আর তাই যখনই দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন আসবে, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোনও আদর্শের কথা ভাবলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ভাবনা ভাগ করে নেওয়া এবং নতুন ভাবনার গতিতে কোনও বাধা সৃষ্টি করা উচিৎ নয়। আমাদের দেশের মাটি হল সেই মাটি যেখানে বিভিন্ন ভাবধারার বীজ বিকশিত হয়েছে। এই ঐতিহ্যকে আরও শক্তিশালী করার দায়িত্ব আমাদের যুব সম্প্রদায়ের। এই ঐতিহ্যের জন্য ভারতে বিশ্বের সবথেকে প্রাণবন্ত গণতন্ত্র রয়েছে বলে মোদী মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন…মুশিদাবাদে তৃণমূল কমিটির ব্লক সমাবেশ
তিনি আশা করেন, এই মূর্তির মাধ্যমে দেশ একতার দর্শনে উদ্বুদ্ধ হবে এবং যুব সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলবে, স্বামীজি যা আশা করতেন। তিনি আশা করেন, এই মূর্তির মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী ভারতবর্ষ গড়ার যে স্বপ্ন স্বামীজি দেখতেন তা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।