এখন যেন একাল-সেকালের পার্থক্য। দুই বছর আগে যে পড়ুয়া ক্লাসের নাম শুনলেই পেটে ব্যথা অনুভব করত, এখন সে বাড়িতে অনলাইন ক্লাসে মগ্ন। যে পড়ুয়া শুধুমাত্র ক্লাস করত বন্ধুদের ক্লাস ছেড়ে আড্ডা দেবার জন্য এখন তার সঙ্গে আর দেখা হয় না কোনও বন্ধুর। ক্লাস করতে গেলে এখন ব্যবহার করতে হয় গুগল বা জুম অ্যাপ, এটাই নাকি অনলাইন ক্লাসের মাধ্যম। করোনাকালে যতই অনলাইন হোক ক্লাস, বেশ কিছু পড়ুয়ার মন পড়ে থাকে অফলাইনে। সোমবার কলকাতার Jadabpur বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে হঠাৎ দেখা গেল একদল পড়ুয়া চার নম্বর গেটের বাইরে বেঞ্চ পেতে শুরু করছে ক্লাস।
যে ক্লাস হবার কথা চার দেওয়ালের মাঝখানে ক্লাস রুমে, তা Jadabpur বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কেন? এসএফআই সমর্থিত বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার এটাই অভিনব প্রতিবাদ। তাদের দাবী, অনেক হল অনলাইন, এবার হোক অফলাইন। আদতে করোনাকালে লকডাউন কাটিয়ে ছাড়ের আওতায় আনা হয়েছে অনেক কিছু, তাদের অভিযোগ শুধুমাত্র ক্লাস রুমের তালা বন্ধ প্রায় দুই বছর ধরে। তারই প্রতিবাদ জানাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বেঞ্চ পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ক্লাস করলেন ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইন্স ও কলা বিভাগের পড়ুয়ারা।
অধ্যাপিকার অভিযোগ, ভ্যাকসিন হওয়ার পরেও শুধুমাত্র সরকারের নিদিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে বন্ধ ক্লাস রুমগুলো। সোমবার এক অন্য ধরনের ক্লাসরুম দেখে অবাক যাদবপুরের পথ চলতি মানুষ। এই অভিনব ক্লাস রুমের ভাবনা শুধুই সোমবার নয়, আগামী দুদিন চলবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। যদিও সোমবার প্রথম ক্লাসে সাম্প্রতিককালের পেগাসাসের মতো জ্বলন্ত ইস্যুকে সামনে রেখে ক্লাস করালেন অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। এই ক্লাসের পরে অনেক পড়ুয়াই বললেন সত্যি অনলাইন ক্লাসের বদলে অফলাইনে গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। মনোবিদদের মতে এই ধরনের অনলাইন ক্লাসে প্রচুর পড়ুয়ার অসুবিধাই যে হচ্ছে তা নয় প্রকৃত গঠনমূলক ভাবনা বা আলোচনার অভাব দেখা যাচ্ছে।