
হাওড়ার শিবপুরে (Shivpur) পাঁচ বন্ধুর মধ্যে নেশার ট্যাবলেট নিয়ে বচসা থেকে গন্ডগোলের জেরে তরবারির কোপে ঘটনাস্থলেই এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে ওই এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ পেয়ে ঘটনায় মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই পুলিশ চার বন্ধুকে গ্রেফতার করে। শনিবার দুপুরে এদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়। মৃত যুবকের নাম মহঃ রায়েশ আজম ( ১৮)। তিনি শিবপুরের (Shivpur) কাউসঘাট রোডের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় রায়েশ কলকাতায় পার্টিতে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।
গভীর রাতে তাঁরা শিবপুর (Shivpur) থানা থেকে ঘটনার খবর পেয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ছুটে এসে রায়েশ আজমকে মৃত অবস্থায় দেখেন। মৃত যুবক পড়াশোনার পাশাপাশি কাপড়ের ব্যবসাও করতেন। পুলিশ তাঁদের জানায় শিবপুরের অলোকা সিনেমা হল সংলগ্ন হরিসভার কাছ থেকে রায়েশকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে বন্ধুদের মধ্যে নেশার ট্যাবলেট নিয়ে বচসার জেরেই এই খুনের ঘটনা। এরপর তরবারি জাতীয় ধারাল অস্ত্রের সাহায্যে গলায় কোপ মেরে যুবককে খুন করা হয়। মৃতের দাদা আমির আজম শিবপুর থানায় চার বন্ধুর নামে রাতেই এফআইআর করেন।
তারপরেই সিসিটিভি ফুটেজ ও সূত্র কাজে লাগিয়ে পুলিশ রায়েশের চার বন্ধুকে গ্রেফতার করে। শিবপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১-১৫ মিনিট নাগাদ মৃতের দাদা আমির আজম থানায় এসে ভাইয়ের চার বন্ধু রাজা আলি, আরিয়ান রাজা খান, মহঃ ফয়জল ও বিকাশ ভার্মা ওরফে বৌয়া’র নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, এই বন্ধুরা মিলে তাঁর ভাই মহঃ রায়েশ আজমকে শিবপুরের বিপ্রদাস চ্যাটার্জি লেনের হরিসভার সামনে ধারাল অস্ত্রের সাহায্যে খুন করে।
আরও পড়ুন অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar) অভিনীত ‘বেল বটম’ সিনেমা নিষিদ্ধ হলো সৌদি আরব, কাতার ও কুয়েতে
এদিকে, পুলিশ দেহ উদ্ধারের পর হাওড়া জেলা হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা রায়েশকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে, পুলিশ অভিযোগ পেয়ে রাতেই এলাকায় তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে। এদের চারজনকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা তাদের অপরাধের স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে রায়েশের নেশার ট্যাবলেট নিয়েই অশান্তি হয়।
ঝগড়ার সময় তার হাতে থাকা ধারাল তরবারি দিয়ে প্রথমে সে এক বন্ধুকে মৃদু আঘাত করে। এই দেখে বাকি তিন বন্ধু ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তখন তাদের মধ্যে একজন সেই অস্ত্র কেড়ে নেয় রায়েশের হাত থেকে। এরপর তাদের নিজেদের মধ্যেই ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ধস্তাধস্তির মধ্যে যে বন্ধুর হাতে ওই ধারালো অস্ত্র ছিল সে তা চালিয়ে দেয় রায়েশের উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রায়েশের।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, রাতে রাস্তার ধারে রায়েশের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। এরপর মাত্র দু’ঘন্টার মধ্যেই দোষীদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।