এমবিবিএস ডিগ্রি হাতে পাওয়ার পর উচ্চশিক্ষা লাভের আকাঙ্খায় চিকিত্সকরা জোর ধাক্কা খেয়েছেন। কারণ, NEET PG সুপার স্পেশালিটি পরীক্ষার পাঠক্রমে শেষ মুহূর্তে কিছু বদল ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন সোমবার কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ত্সনা করে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। আদালতের বিচারপতি কেন্দ্রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এই যুবা চিকিত্সকদের যেন ক্ষমতার খেলায় ফুটবল হিসেবে না দেখা হয়।” ৪ অক্টোবরের মধ্যে পরবর্তী হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রকে নিজের জবাব জানাতে বলেছে আদালত।
আর ও পড়ুন বিস্ফোরক বাবুল সুপ্রিয়, বিজেপির বিরুদ্ধে কী বললেন তিনি ?
মামলাটির শুনানি চালাকালীন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিভি নগরত্নর বেঞ্চ নিজেদের পর্যবেক্ষণে বলে, “ক্ষমতার খেলায় এই কম বয়সী চিকিত্সকদের ফুটবল হিসেবে গণ্য করবেন না। এই ডাক্তারদের আমরা অসংবেদনশীল আমলাদের দয়ার উপর ছেড়ে দিতে পারি না। আপনারা নিজেদের ঘর গোছান। কারোর কাছে ক্ষমতা আছে মানে আপনি যেভাবে খুশি তার ব্যবহার করবেন, এটা হতে পারে না। বিষয়টা ওঁদের কেরিয়ারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেষ সময়ে এভাবে পরিবর্তন আনা যায় না। শেষ মুহূর্তে পাঠক্রম বদল এই পড়ুয়াদেরও বিভ্রান্ত করতে পারে।”
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের আরও বলেন, “কম বয়সী চিকিত্সকদের সঙ্গে আরও সংবেদনশীল আচরণ করুন। জাতীয় চিকিত্সা সংস্থা কী করছে? চিকিত্সকদের জীবন নিয়ে এখানে কথা হচ্ছে। আপনারা আচমকা নোটিস জারি করে পাঠক্রম বদলে দেবেন, এটা কী ভাবে সম্ভব! চিকিত্সকেরা এই পরীক্ষার প্রস্তুতি কয়েক মাস আগে থেকে শুরু করেন। পরীক্ষার আগের মুহূর্তে পাঠক্রম বদল করার যুক্তিটা কী? পরের বছর পাঠক্রম বদল কেন আপনারা করতে পারছেন না?”
NEET PG সুপার স্পেশালিটি পরীক্ষার মাত্র দু’মাস বাকি, তার আগেই বদলে দেওয়া হয়েছে পাঠক্রম। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৪১ জন যুবা চিকিত্সক। তাঁদের সেই আবেদনেই সাড়া দিয়ে এ দিন কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে এক হাত নিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৮ সাল থেকে এই পরীক্ষার ৪০ শতাংশ প্রশ্ন জেনারেল মেডিসিন থেকে, এবং বাকি ৬০ শতাংশ প্রশ্ন সুপার স্পেশালিটি থেকে করা হত। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর মাসদুয়েক বাকি থাকতেই কেন্দ্র ঘোষণা করে ১০০ শতাংশ প্রশ্নই জেনারেল মেডিসিন থেকে করা হবে। যে সিদ্ধান্তের পর রীতিমতো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে চিকিত্সকদের।
আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, NEET-SS 2021-র পরীক্ষার দিনক্ষণ চলতি বছরের ২৩ জুলাই ঘোষিত হয়েছিল। জানানো হয়, ১৩ এবং ১৪ নভেম্বর পরীক্ষা হবে। কিন্তু নির্ঘণ্ট ঘোষণার মাসখানেক পেরিয়ে যাওয়ার পর গত ৩১ অগস্ট সেই পরীক্ষার পাঠক্রম বদলে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই আদালতের দ্বারস্থ হন চিকিত্সকেরা।