ভবানীপুরে নির্বাচনে কত বুথ-কেমন নিরাপত্তা ! কতটা তৎপর কমিশন, জানুন। রাত পোহালেই ভোট। সমস্ত কোভিড বিধি মেনেই চলবে ভোটগ্রহণ। সকাল ৭টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। মোট ২৮৭টি বুথ থাকছে ভবানীপুরে। এর মধ্যে মেন বুথ ২৬৯টি। প্রত্যেকটি বুথের বাইরে ২০০ মিটার এলাকা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ লাখ ৬ হাজার ৪৫৬জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৫ হাজার ২০৯ জন। মহিলা ভোটার ৯৫ হাজার ২০৯ জন।
রাতেই এলাকায় পৌঁছে যাবে অতিরিক্ত বাহিনী। নির্বাচন কমিশন সূত্রে তেমনই খবর। এদিকে উপনির্বাচনের আগে কমিশনে ফের বহিরাগত নালিশ জানাল বিজেপি। নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তিতে আপত্তি জানিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে হাইকোর্টে। নির্বাচন কমিশনকে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মুখ্যসচিবের ভূমিকা নিয়েও অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে, আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নির্ধারিত দিনে, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বরই ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। সেদিনই আবার মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ কেন্দ্রে সাধারণ নির্বাচন। ঝুঁকি নিতে নারাজ কমিশন। ভবানীপুর, জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ইতিমধ্যেই ৫২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ কোম্পানি থাকবে ভবানীপুরে।
কমিশন সূত্রে খবর, বিরোধীদের দাবি মেনে মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রে আরও ২০ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। ফলে সবমিলিয়ে দাঁড়াল ৩৫ কোম্পানি। ভবানীপুরের উপনির্বাচনের দিন শহরের নিরাপত্তা নিয়ে কঠোর লালবাজার। বুধবার থেকেই ভবানীপুর কেন্দ্রে পৌঁছছে অতিরিক্ত ফোর্স। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ আগামীকাল দূর্গের মতো ঘিরে রাখবে ভবানীপুর কেন্দ্রে।
আর ও পড়ুন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে জন্ম-মৃত্যুর সাক্ষী থাকলেন এক ‘মা’
ভবানীপুর কেন্দ্রের প্রহরায় ৫ জন জয়েন্ট সিপি পদমর্যাদার আধিকারিক। ১৪ জন ডেপুটি কমিশনার ও ১৪ জন অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার থাকছেন। থাকবে ৯টা স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৩ টা কিউ আর টি ভ্যান, ৯ ফ্লাইং স্কোয়াড, প্রস্তুত থাকবে র্যাফ। র্যাফে থাকবে মহিলা অফিসারও। চলবে রিভার প্যাট্রোলিং। ৩৮ টি জায়গায় পুলিশ পিকেট করা হচ্ছে। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে মোতায়েন থাকবেন ১০০ জন ট্রাফিক সার্জেন। ভবানীপুর কেন্দ্রেই শুধু থাকবে ৭টা নাকা পয়েন্ট।
যে যে রাস্তায় পুলিশের বড় গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না, সেগুলোর জন্য থাকবে বাইক পুলিশ। ভবানীপুর কেন্দ্রের ৯টা থানায় মোটর সাইকেল ইউনিট থাকবে ২টো করে। শুধু রাজ্য কিংবা কলকাতা পুলিশ নয়। ভাবনীপুরে মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। মোট ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে ভবানীপুরে। ভবানীপুরে হাইভোল্টেজ ভোটে প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার দিনভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন ভবানীপুরের অধিকাংশ ওয়ার্ড। এই অবস্থায় তাই সবরকম প্রস্তুতি বাড়িয়ে তুমুল তৎপর নির্বাচন কমিশন। দুর্যোগের জন্য কয়েক দফা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। ইভিএম মেশিনকে নিরাপদ রাখার জন্য ট্রান্সপারেন্ট পলিথিন ব্যাগ দেওয়া হবে। যাতে ইভিএম মেশিন জলে ভিজে না যায়। প্রত্যেক ভোট কর্মীকে দেওয়া হচ্ছে রেনকোট।
প্রত্যেকটি বুথে সেডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বৃষ্টিকে মাথায় রেখে। ডিসি আরসি সেন্টার থেকে যাতে ভোট কর্মীরা নিরাপদে ভোটের যাবতীয় সামগ্রী নিয়ে যেতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা কমিশনের। এই প্রথম ভোট কর্মীদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে রেনকোট। যে জায়গাগুলিতে জল জমে সেই জায়গাগুলো ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যৌথ পরিদর্শনও করেছে। এই জায়গাগুলিতে সব সময় পাম্প জল বের করার জন্য ব্যবস্থা থাকবে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট দুটি বোটের ব্যবস্থা রাখছে, যাতে তিন ফুটের উপর জল জমলে এই বোটগুলি ব্যবহার করা যাবে।