পুজোর সময় রাজ্যে নাশকতার আশঙ্কা, ততপর হলো রাজ্য প্রশাসন । পুজোর সময় রাজ্যে নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞদের অনেকের ব্যাখ্যা, জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি মূলত নিশানা করে জনবহুল স্থান, উৎসবের ভিড় বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে, যেখানে নাশকতা ঘটালে বড় ধরনের ক্ষতি করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উদ্দেশ্যের প্রচারও সম্ভব। স্বাভাবিকভাবেই দুর্গাপুজোয় রেকর্ড ভিড় হয়। ফলে এই সময়কেই বেছে নেয় জঙ্গিরা। তারা মনে করে, তখন নাশকতা ঘটাতে পারলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠবে, অস্থিরতা বাড়বে। একই ভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবে।
আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর তৎপরতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এই অবস্থায় উৎসবমুখী রাজ্যগুলিকে এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েই রেখেছে কেন্দ্র।
ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফেও নেওয়া হয়েছে সাবধানতা। নাশকতা ঠেকাতে প্রয়োজন পুলিশি ততপরতা এবং নাগরিক-সচেতনতা। কিছু দিন আগে পুজোর বিধি প্রকাশ করেছে নবান্ন। নিয়ম মেনে পুজো করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে পুজোর ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
আর ও পড়ুন দ্বিতীয়ার রাতেই জনজোয়ার নামলো রাজপথে, উঁকি দিচ্ছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা
রাজ্যে কোভিড বিধি পালনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের উপরে নজরদারির বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছে সরকার। কারও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হল তার উপরে নজর রেখে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করতে বলা হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। বড় পুজোগুলিতে ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরা এবং ‘ওয়াচ টাওয়া’ বা নজরমিনার বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘন বসতিপূর্ণ, স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ এবং মিশ্র এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা হচ্ছে।
বিসর্জনেরও নিয়মবিধি ও তারিখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে নবান্ন। স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশ, শুধু ১৫, ১৬, ১৭ এবং ১৮ অক্টোবরেই প্রতিমা ভাসান দেওয়া যাবে। পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে বিসর্জনের দিন এবং সময় স্থির করতে বলা হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। ভাসানের জন্য কলকাতা পুলিশের এলাকায় গঙ্গার ২৪টি ঘাট-সহ মোট ৭০টি ঘাট নির্দিষ্ট রয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, বিসর্জনের জন্য নির্দিষ্ট চার দিন সব ঘাটেই পর্যাপ্ত বাহিনী থাকবে। সঙ্গে থাকবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। দুই শিফটে ওই বাহিনী মোতায়েন করার কথা আছে। নজরমিনার থাকবে সব ঘাটেই। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরার সাহায্যে চলবে লাগাতার নজরদারি।
এছাড়া বিসর্জনের দিনগুলিতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ পিকেট থাকছে। যে-কোনও ধরনের নাশকতা ঠেকাতে সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন করা হবে।