শিশু ও মানব পাচার রোধ করার আইন সম্পর্কে জানুন। শিশু পাচার হল মানব পাচারের এক রূপ এবং জাতিসঙ্ঘ কতৃক দাসত্ব, শ্রম ও শোষনের উদ্দেশ্যে একটি শিশুকে অপহরন করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়। ভারতে শিশু পাচারের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। জাতীয় অপরাধ রেকর্ড অনুযায়ী প্রতি আট মিনিটে একজন শিশু নিখোঁজ হয়।আমাদের দেশে এমন অনেক গ্ৰাম আছে যেখানে এখন ও মেয়েদেরকে বোঝা মনে করা হয়ে থাকে ।
সেই সব সংসারে মেয়ে জন্মগ্রহণ করলে পরিবারের মনে হয়ে তারা এক বোঝা কে বড় করে তুলতে হবে। আর এই সব মনোভাবের কারণ হল মানুষের মধ্যে শিক্ষার অভাব। অর্থনৈতিক ভাবে আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে। আর অভাবের সংসারে নুন আনতে যখন পান্তা ফুরোয় সেই সংসারে মেয়ে কে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দেবার জন্য বড় করে তোলা তাদের কাছে বেকার মনে হয়ে। পিছিয়ে পড়া গ্ৰামে দেখা যায় পড়াশোনা না করিয়ে তাদের কে কাজে লাগিয়ে দিয়েছে, কারণ সংসার চালানো সম্ভব হয়ে উঠছিলো না বলে। আর এই কারণে শিক্ষার আলো ফুটে উঠতে পারেনি ।
আর সেই কারণে অনেক মেয়েদের কুসংস্কারের বলি হতে হয়েছে । অনেক সময় দেখা যায় কিছু টাকার জন্য এই বাড়ির মেয়েটাকে বিক্রি করে দিয়েছে পাচারকারীর হাতে। আর এই সব পাচারকারীরা অল্প টাকার লোভ দেখিয়ে এই সব মেয়েদেরকে নিয়ে যাবার জন্য ফাঁদ পাতে।
বিভিন্ন রকমের প্রলোভোন দিয়ে তাদের ফাঁদে ফেলে ছোট কন্যা সন্তান কে এই পাচারকারীর নিজের সাথে নিয়ে চলে যায়। অভাবের সংসারে আর্থিক অবস্থা ঠিক করার জন্য তখন এই টাই ওনাদের ঠিক বলে মনে হয়ে। তারা জানেনা এই শিশুটিকে কোন অন্ধকার দুনিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আর সেখানে তাকে কি কি সহ্য করতে হবে।
আর ও পড়ুন বিকেলের চায়ের আড্ডা জমাতে বানিয়ে ফেলুন পটেটো ব্রেড পাকোড়া
শুধু যে কন্যা সন্তান পাচার হচ্ছে তা কিন্তু নয়। ছেলেরাও এই পাচারকারীর শিকার হয়। রেকর্ড অনুযায়ী ভারতে শিশু পাচারের পরিমাণ অনেক বেশী। কাজের লোভ দেখিয়ে এই শিশু গুলোকে অত্যাচার, যৌন হেনস্থার আরও অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। মানব পাচার অথবা অবৈধ মানব বিক্রি বেশিভাগ যৌনশোষন মূলক কাজের জন্য করা হচ্ছে রেকর্ড অনুযায়ী। মানব পাচার অন্যতম দ্রুত অপরাধ হিসাবে গন্য করা হয়েছে। রেকর্ড অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে চব্বিশ পরগনার এবং উত্তর বঙ্গে সব থেকে বেশী শিশু ও মানব পাচারের শিকার।
এই মানব পাচার রুখতে সরকার ‘Criminal Law(Amendment) Act 2013’ ‘Section 370 Of Indian Penal Code’ আইনটি কার্যকর করে। এই আইন অনুযায়ী যদি কেউ মানব বা শিশু পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তাহলে তাঁর সাজা অবধারিত। অপরাধ প্রমাণীত হলে কম পক্ষে ৭ থেকে ১০ বছরের শাস্তি ও কারাদন্ড। ‘Child Care Protection Act’ দ্বারা সমস্ত শ্রেনীর শিকার হওয়া নারী ও শিশুরা নিজেদের নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে সাহায্য পায়।
পূনরায় তাদের পরিবারের লোকজনের কাছে ফিরে যেতে পারে। আমাদের এই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে। সমাজে যারা এই সমস্ত অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তাহলেই এই সমাজ থাকবে এগিয়ে এবং সুরক্ষিত।