শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কী খাবেন জামাই? রইল কিছু পরামর্শ। শ্বশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি— এদেশে এমনই একটি বহুল প্রচলিত বচন।বাঙালি সংস্কৃতিতে ‘জামাই আদর’ বলে একটা কথা আছে। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে নানা রকম খাবারদাবারের আয়োজন করেন শ্বশুর-শাশুড়ি।
জামাইকেও খেতে হয় নানা রকম খাবার। নতুন জামাই হলে তো কথাই নেই! পাতে একের পর এক আসতে থাকে রাজভোগ শুরু করে নানা পদের উপাদেয় খাবার। আদুরে শ্যালিকা-শ্যালকের আবদারে হয়তো একটু বেশিই খেতে হয়। কিন্তু হুট করেই এভাবে বেশি খাবার খেতে গিয়ে শরীরে ক্যালরির বাড়তি চাপ পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তাই শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে খাবারদাবারের কিছু পরামর্শ মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। খাবার নির্বাচন করে খেতে হবে। খাসির মাংস কষা, গলদা চিংড়ি কিংবা অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার যাদের সয় না, এ ধরনের খাবার তাদের এড়িয়ে চলাই ভালো।
শ্বশুরবাড়ি গিয়ে অনেকে নিয়ম মানতে না পেরে বেশি খেয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যেদিন বেশি খাবার খাবেন, সেদিন বাড়তি ক্যালরি ঝরাতে ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি অবশ্যই করবেন। এরপরও যদি পেটে অস্বস্তি লাগে বা অম্লতা হয়, অ্যান্টাসিড নিতে পারেন। তবে যে খাবার ভালো হজম হয়, সেটা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শ্বশুরবাড়ি গিয়ে খাবারদাবার সম্পর্কে আপ্নাদের কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হল-
কম খান: কোথাও বেড়াতে গেলে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা। খাবারের প্রকার যদি বেশি হয়, তবে অল্প অল্প করে তা খেয়ে দেখতে পারেন। খাবার এভাবে ভাগ করে খেলে কম খাওয়া হবে এবং শরীর ঠিক থাকবে।
বেশি করে তরল খাবার খান: বেশি করে তরলজাতীয় খাবার খেলে খিদে কম লাগবে। তরল না খেলে বারবার খেতে ইচ্ছা করবে।
ফল খান: মিষ্টি বা চিনিজাতীয় খাবারের বদলে ফল খান। শুকনো ফল, ফলের জুস, সালাদ মুখোরোচক হিসেবে খেতে পারেন। হালকা নাশতা হিসেবে শুকনো ফল খেতে পারেন। এতে হয়তো ক্যালরি বেশি, কিন্তু চকলেটের বিকল্প হতে পারে ফল।
গল্প করুন: মোবাইল ফোন, ফেসবুক ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে গল্প করুন। এতে খাবারের দিক থেকে মনোযোগ দূরে থাকবে।
মিষ্টি সাবধানে খাবেন: মিষ্টি লোভনীয় নিঃসন্দেহে। শ্বশুরবাড়িতে জামাইয়ের জন্য নানা রকম মিষ্টি রাখা হয়। থাকে পিঠারও নানা আয়োজন। এ লোভ ঠেকানো হয়তো কঠিন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যত চিনি খাবেন, শরীর তত বেশি চিনি গ্রহণের জন্য উৎসুক হয়ে উঠবে। চিনিযুক্ত খাবারের বদলে স্বাস্থ্যকর কোনো খাবার খেতে পারেন।
নিয়মিত খান: সময়ের খাবার সময়ে খাবেন। একেবারে বেশি খাওয়া ঠিক নয়। আবার অনেক সময় না খেয়ে থাকাও ঠিক নয়। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তে চিনির মাত্রা কমে যাবে। এতে চিনিযুক্ত খাবারের দিকে মন টানবে বেশি। আনন্দমুখর পরিবেশে অনেকে সময়মতো খান না। কিন্তু মাঝেমধ্যে স্বাস্থ্যকর হালকা টিফিন দিয়ে পেট ভরা রাখুন। এতে একবারে বেশি খাওয়া হবে না।
আর ও পড়ুন পুত্র ও কন্যা সহ নিখোঁজ এক গৃহবধু
ব্যায়াম করুন: শ্বশুরবাড়ি গেলেও শরীর একেবারে ছেড়ে দিয়ে খাওয়াদাওয়া করবেন না। নিয়মিত ব্যায়াম চালু রাখুন। হাঁটুন বা কিছুটা দৌড়ান। সকালে-বিকেলে শরীরচর্চা করুন।
খাবার নির্বাচন করুন: কী খাবেন আর কী খাবেন না, সে বিষয়টি ঠিক করুন। সাধারণত বেড়াতে গেলে খাবার ও মিষ্টি খাওয়ার হিসাবে গরমিল হয়ে যায়। তবে ক্যালরি হিসাব করে খেতে পারেন। কোমল পানীয় কিংবা মিষ্টিজাতীয় বেভারেজ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। এর পরিবর্তে জল খান বেশি করে। চা খেলেও মিষ্টি চা না খাওয়াই ভালো। লেবুজল কিংবা শসার জুস খেতে পারেন।