পশ্চিমবঙ্গে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে বিজেপি। দিল্লিকে শুরু হয়েছে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক। বিজেপির সেই জাতীয় কর্মসমিতির সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে জেপি নাড্ডা কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন যে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। এই সময়ে, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, অনুপম হাজরা, স্বপন দাশগুপ্ত-সহ এমন অনেক নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, যারা বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। নাড্ডা বলেন, আমি বাংলার মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা আপনাদের সাথে আছি এবং রাজ্যে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করব।
সারা দেশ জুড়ে চলছে উৎসবের মরশুম। সবে মিটেছে দীপাবলি। তার মধ্যেই দিল্লিতে শুরু হয়ে গেল বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। কোভিড আবহে দীর্ঘদিন পর বৈঠকে যোগ দিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে যোগ দিতে এদিন সকালেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নয়াদিল্লির এনডিএমসি কনভেনশন সেন্টারে পৌঁছে যান। জেপি নড্ডা, অমিত শাহ সহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ১০০-র বেশি সদস্য বৈঠকে যোগ দেন। হাজির রয়েছেন রাজ্যের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। বছর ঘুরতেই উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। যাকে লোকসভা ভোটের আগে সেমিফাইনাল বলা যেতে পারে।
সেই বিষয়েই বৈঠকে মূল আলোচনা হবে বলেই জানা গিয়েছে। তবে এর মাঝে বাদ গেল না বাংলার প্রসঙ্গও। মুখ খুললেন স্বয়ং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। জেপি নাড্ডা বিধানসভা নির্বাচনে তাদের সমর্থনের জন্য বাংলার জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে বাংলায় আমাদের উপস্থিতি ছিল না। কিন্তু এখন আমরা ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি।
আমাদের দখলে বাংলার ১৮ টি লোকসভা এবং ৭৭ টি বিধানসভা আসন রয়েছে। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৯ কোটির জনসংখ্যার একটি রাজ্যে এমন বৃদ্ধি দেখা গেছে। কিন্তু নির্বাচনের পর আমাদের ৫৩ জন কর্মীকে হত্যা করা হয়। গৃহহীন হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ। নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট সবাই এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
আর ও পড়ুন অবাক হলো এবার উত্তরবঙ্গ, কেন জানেন?
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিশানা করে নাড্ডা বলেন, “কোভিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করা হচ্ছে না বাংলা থেকে। মোদীজি টিকা দিচ্ছেন। কিন্তু বাংলার মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে না। এটা অমানুষিকতার দৃষ্টান্ত।” এই বৈঠকে পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পরিকল্পনার পাশাপাশি নজর রাখা হয়েছে বাংলার পরিস্থিতি নিয়েও৷ ভোটের পারফরম্যান্স নিয়েও চুলচেরা বিশ্লেষণ চলে বলে সূত্রের খবর৷
এও বলা হয়েছে বাংলায় যেসব বিজেপি প্রার্থীরা হিংসার শিকার হয়েছে, পদ্ম শিবির তাদের সকলের পাশে দাঁড়াবে এবং তারা যাতে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্টে সঠিক বিচার পায়, সেই চেষ্টা করা হবে দলের তরফে। এই বৈঠকে প্রায় ৩৪২ জন সদস্য যোগদান করেছেন। ডিজিটালি রেজিস্ট্রেশন করেছেন সকলেই। দলের বর্ষীয়ান নেতা দুই নেতা এল কে আদবানি এবং মুরলী মনোহর যোশী বাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। এদিন বৈঠকের শুরুতে দেশে ১০০ কোটি ডোজ টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বরমাল্যে বরণ করে নেওয়া হয়। এছাড়াও বিজেপির এই বৈঠকে সিএএ এবং কৃষক সমস্যা ও আন্দোলন নিয়েও আলোচনা হয়৷