নদীয়ার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবন মঞ্চে প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করলেন নদীয়ার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবন মঞ্চে। এখানে তিনি ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং নতুন করে ৬৭৮ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে আগামী দুয়ারে সরকার চালু হবে শীঘ্রই মানুষ সরকারি প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সরকারি প্রকল্পের নানাবিধ সমস্যা দূরীকরণে তিনি পৌরসভাতে চালু করেছেন বাংলা সহয়তা কেন্দ্র। যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ এখনো দ্রুতগতিতে হচ্ছে না সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মহাবিদ্যালয় এর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হবে রানাঘাটে। জলস্বপ্ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করার কথা জানিয়েছেন এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে অর্থ।
এছাড়াও বিভিন্ন বিধায়ক তাদের এলাকার উন্নয়নের কথা বলেন। বিএসএফ এবং রাজ্য সরকারের পুলিশদের সদাসতর্ক তার সঙ্গে কাজ করতে বলেছেন যাতে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে না যায় সে ব্যাপারেও তিনি সতর্ক করেছেন রাজ্য পুলিশ কে। বিভিন্ন থানার পুলিশ দের সাথে কথা বলেন।
উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি বিধায়ক ও কারা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বিধায়ক কল্লোল খাঁ বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় তাপস সাহা প্রমুখ। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সীতাকুন্ড তিনিও কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন সামনেই পৌরসভা নির্বাচন তাই সকলকে দ্রুত একসাথে কাজ করার কথা বলেন এবং উন্নয়নমুখী কাজ শেষ করা কথা বলেন।
উল্লেখ্য, দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে উপকৃত হচ্ছেন মানুষ। এখানে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে আবেদনপত্র জমা পড়ছে এবং মানুষ বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন। অনেকে আবেদন করেছেন কিন্তু কিছু ভুল ত্রুটির কারণে পাননি তাদের আবেদন পত্র সংশোধন করে দেওয়ার কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার নদীয়া জেলায় প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান আগামী জানুয়ারির এক তারিখ থেকে ১০তারিখ এবং কুড়ি থেকে ত্রিশ তারিখ পর্যন্ত দুয়ারে সরকার হবে।
দুয়ারে সরকারের মধ্যে দিয়ে বাংলার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন তাই দুয়ারে সরকারের কর্মসূচি খুবই প্রয়োজন তাই আমরা তৃতীয় বারের জন্য ফের চালু করা হলো জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি উল্লেখ করেছেন যে দুয়ারে সরকারের মধ্যে দিয়ে নদীয়া জেলায় লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন এবং যারা পাননি তারা ওই দুয়ারে সরকারে আবেদন করতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি জানিয়েছেন যে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের ৯৯% মহিলা আবেদনপত্র জমা দিয়ে সরকারি টাকা পাচ্ছেন। এছাড়াও৮৫হাজার আবেদনপত্র অনুমোদন হয়নি সেগুলো সংশোধনের কাজ চলছে। ইস্মার্ট স্টুডেন্ট কার্ড ডিসেম্বরে দেয়া হয়েছে ২৭৫ জন কে। ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ৭০০ অনুমোদনের পথে।
আরও উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা স্টুডেন্ট কার্ড পেতে পারেন তার প্রচার চলছে এবং ওই দুয়ারে সরকারে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে এই প্রচার করা হয়েছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। নদীয়া জেলায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে নানান ধরনের প্রকল্পের পরিষেবা পেটে আবেদন করেছেন কুড়ি লক্ষ মানুষ। কিন্তু ১৭ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন প্রকল্পের পরিষেবা পেয়েছেন।
জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে অবহিত করেছেন যে আগামী দুয়ারে সরকারি আরো প্রচুর মানুষ যারা এখনো নানান প্রকল্পে সুযোগ পাননি তারা যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রয়েছে লক্ষী ভান্ডার প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী কৃষক বন্ধু কন্যাশ্রী রূপশ্রী সবুজ সাথী প্রভৃতি সরকারি প্রকল্পে সুযোগ পাচ্ছেন দুয়ারে সরকারের মধ্যে দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন যে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা ব্যাংকে ঢুকেছে। কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আমি টাকা ডবল করে দিয়েছি।
আর ও পড়ুন শস্য সুরক্ষার জন্য বীমার উপর একশো শতাংশ জোর দিয়েছে সরকার
মমতা আরো জানিয়ে দিয়েছেন যে একদিকে দুয়ারে সরকার অন্যদিকে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র সকল মানুষের পক্ষে সুবিধাজনক একটা পথ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পেতে সুবিধা অসুবিধা দূর করতে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন পৌরসভাতে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে সেখানে দুইজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর দেয়া হয়েছে যাতে মানুষ দ্রুত সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারেন এবং তিনি উল্লেখ করেছেন এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলির সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলাশাসক সকলের জন্য ভিজিট করেন।
তাই দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে ব্যাপক সফলতা ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরো ঘোষণা করেছেন যে পাইপ লাইনের মধ্যে দিয়ে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে হবে আগামী ২৪ সালের মধ্যে তার উদ্যোগ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে ।তিনি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ২হাজারকোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। এই প্রকল্পে চাষিরা বছরে কুড়ি হাজার এবং কেউ ৪হাজার টাকা পাচ্ছেন। তাই দুয়ারে সরকার কর্মসূচির গুরুত্ব অপরিসীম।