আলিপুরদুয়ারে বোল্ডার দিয়ে থেঁতলে চিতাবাঘ খুন, এলাকায় চাঞ্চল্য । বক্সার জঙ্গলে যখন দু’দশকেরও বেশী সময় পর রয়্যালবেঙ্গলের দেখা মেলায় উচ্ছ্বসিত বন দফতর এবং পশুপ্রেমীরা ঠিক তখনই আলিপুরদুয়ার জেলাতেই পিটিয়ে মারা হল চিতাবাঘ।
বুধবার কাকভোরে মাদারিহাট থানার গ্যারগেন্ডা চাবাগান লাগোয়া গ্যারগেন্ডা নদীর বেডের কাছে একটি রক্তাক্ত চিতাবাঘ পরে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃত চিতাবাঘের শরীরে ধারাল অস্ত্রের আঘাত পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল বাশ, লাঠি ও রক্ত মাখা বোল্ডার। সঙ্গে সঙ্গে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে খবর দেওয়া হয়।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান থেকে বন্যপ্রান স্কোয়াডের কর্মীরা গিয়ে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠান। উদ্ধারের সময়ই চিতাবাঘের মৃতদেহের আশপাশে বাশ, লাঠি ও বড় বড় বোল্ডার পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয়ভাবে প্রথমে দুর্ঘটনায় এই চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর রটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দুপুরের পর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আশার পরেই চক্ষু চরকগাছ হয়ে যায় বনকর্তাদের।
আর ও পড়ুন নিজেদের জীবিত প্রমাণ করতে প্রশাসনের দরজায় হন্যে হয়ে ঘুরছে দুই মৃত ব্যাক্তি
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিতাবাঘের বিভিন্ন হার পাজর ভেঙ্গে যাওয়ার প্রমান মেলে। বন দফতরের পশু চিকিতসক জানিয়ে দেন পিটিয়ে খুন করা হয়েছে চিতাবাঘটিকে। ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই বনদফতরের স্নিফার ডগ নিয়ে এলাকায় তল্লাসি শুরু করে বনদফতর। জানা গিয়েছে মৃত চিতাবাঘটি পুরুষ চিতাবাঘ ছিল । বয়স আনুমানিক পাচ থেকে ছয় বছর।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডি এফ ও দীপক এম বলেন, “ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে এটা পরিষ্কার যে চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। বন্যপ্রান সংরক্ষন আইনে আমরা মামলা দায়ের করেছি। দোষিদের খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করে সাজা দেওয়া হবে। স্নিফার ডগ দিয়ে এলাকায় তল্লাসি চালানো হচ্ছে। আমরা এলাকায় বন্যপ্রান বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার ব্যাবস্থা করেছি।”
কিন্তু এই খুনের উদ্দেশ্য কি? বন্যপ্রানের দেহাংশ পাচারের জন্যই কি হাতের কাছে চিতাবাঘ পেয়ে পিটিয়ে খুন করে ফেললেন গ্রামবাসিরা, নাকি ঘরের মুরগি, ছাগল, বাছুর পর চিতাবাঘের পেটে যাওয়ার প্রতিশোধ নিতেই এই খুন। ঘটনায় নানান প্রশ্ন উস্কে উঠেছে।