পিঠেপুলি প্রতিযোগিতায় উপচে পড়া প্রতিযোগীর ভীড়। সোমবার মরসুমের শীতলতম দিন। আর সেই শীতলতম দিনের সন্ধ্যেয় পিঠেপুলির প্রতিযোগিতায় দেখা গেলো উপচে পড়া ভীড়। গত ১৭ই ডিসেম্বর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তাম্রলিপ্ত লোকসংস্কৃতি উন্নয়ন সমিতির ১৭ তম “লোকসংস্কৃতি কে ফিরে দেখা” অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারই অঙ্গ হিসাবে সোমবার মরসুমের শীতলতম দিনে পিঠেপুলি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। জেলার হলদিয়া, মহিষাদল, পাঁশকুড়া শহ বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে।
চাল বেটে কিংবা মিক্সিতে চাল গুঁড়ো করে, সারা দুপুর নিজের হাতে পিঠে বানিয়ে প্রতিযোগিতার আসরে। পাটিসাপটা, পুলিপিঠে আর মালপোয়া। পিঠে চার রকম ঠিকই, কিন্তু সেগুলিকে কত মনোহারি, কতখানি শিল্পমণ্ডিত ভাবনায় সাজানো যায়, না দেখলে বিশ্বাসই হয় না। প্রতিযোগিতার নিয়ম, পিঠে পরিবেশনায় ঘরোয়া ধাঁচ থাকা চাই। গ্রামের হৃদয় ও মগজ সত্যিই আর একবার তাক লাগাল। যাঁরা প্রতিযোগিতায় এলেন সকলেই অত্যন্ত ঘরোয়া মা বোন, দিদি কিংবা মাসিমা -পিসিমা।
পিঠপুলিকে নক্সা করা থালায় ফুল ও চেরি দিয়ে ডেকরেশান করা, মাঝখানে নলেনগুড়ের ছোট্ট একটি বাটি, আহা, কী অসাধারণ ভাবনা। জানি, বলবেন, ওসব এখন ইউটিউব খুললেই সাজানোর আইডিয়া পাওয়া যায়। শীতের সন্ধে পাটিসাপটা আর লোকগানে একেবারে জমে ক্ষীর। এদিন ১৬৫ জন প্রতিযোগী প্রতিযোগিতায় অংশ্রগ্রহন করে।
আর ও পড়ুন রাজ্যের ১০ জেলায় প্রবল শৈত্যপ্রবাহের সর্তকতা
পিঠেপুলি প্রতিযোগিতা উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলী দাস, কর্মাধ্যক্ষ তরুন কান্তি মন্ডল, সমাজসেবী ছবিলাল মাইতি সহ অন্যান্যরা। প্রতিযোগী সুনন্দা বেরা জানান, বার্তমান সময়ে বাড়িতে বাড়িতে শীতের রাতে পিঠেপুলি তৈরির প্রবনতা কমে গিয়েছে। কিন্তু তাম্রলিপ্ত লোকসংস্কৃতি উন্নয়ন সমিতি গত ১৬ বছর ধরে মহিষাদল গনমৈত্রী মাঠে যেভাবে পিঠেপুলি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে তারে আবার যেনো বাড়িতে বাড়িতে পিঠেপুলি তৈরি শুরু হয়েছে।
প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করতে পেরে ভীষন খুশি। সমিতির অন্যতম সদস্য আশীষ খাঁড়া জানান, গ্রামবাংলা থেকে প্রাচীন পিঠেপুলি যাতে হারিয়ে না যায় এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠেপুলি যাতে বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় তাঁর প্রয়াসে আমাদের এই উদ্যোগ।
শীতের রাতে বহু প্রতিযোগি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছে। তাদের উৎসাহ দেখে আমরাও ভীষন খুশি। পিঠেপুলি প্রতিযোগিতা দেখা এবং তা কিনে খাওয়ার জন্য মানুষের ভীড় ছিলো দেখার মতো।।