সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে হলুই গান বা হোলবোল গান

সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে হলুই গান বা হোলবোল গান

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
হলুই

সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে হলুই গান বা হোলবোল গান। হলুই গান বা হোলবোল গান এই গান প্রথম শুরু করেন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের কৃষ্ণপুরের অজিত ঘোষ । বাংলার লোক সমাজে হোলবোল একটি প্রাচীন লোক গান নামে পরিচিত। আগেকার দিনে রাখাল বালকেরা মাঠে গরু চরাতে যেত এবং তারই পাশাপাশি তারা বিভিন্ন রকমের গান বানাতো এবং সন্ধ্যাবেলায় গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে তাদের গোয়ালে উঠিয়ে দিয়ে সেইসব বালকেরা ও আশেপাশের লোকজন খোল ্করতাল  ও খঞ্জনি নিয়ে বেরিয়ে পড়তো   বাড়ি-বাড়ি গান করতে ।

 

তারা এই গানের মাধ্যমে প্রত্যেক বাড়ি থেকে চাল, ডাল আলু ,তরিতরকারি ,তেল, লবণ, ইত্যাদি রান্না করার যাবতীয় জিনিস সংগ্রহ করত। এটি সাধারণত পৌষ মাস ভোর করতো তারা। এবং এই চাল ডাল নিয়ে পৌষ মাস শেষ দিন হবার পর মাঘ মাসের প্রথম দিকে গ্রামের মাঠের মধ্যে বটগাছের নিচে গিয়ে তারা সবাই সেখানে বনভোজন করত এবং গ্রামের সমস্ত লোক সেখানে খাওয়া-দাওয়া করতো।

 

কিন্তু যুগের উন্নয়নের সাথে সাথে আজ যেন এই লোকসংস্কৃতিতে টান পড়েছে। এখন আর নতুন প্রজন্ম এই সব গানের দিকে আগ্রহ দেখায় না ।ফলে অবুলপ্তীর পথে হোলবোল গান । কৃষ্ণগঞ্জের কৃষ্ণপুরের গ্রামের কিছু যুবক এই লোকসংস্কৃতিকে বজায় রেখে চলেছে ৷প্রথা মেনে আজো অজিত বাবুর বাড়িতে গিয়ে প্রথম গান গেয়ে শূচনা করেন এই হোল বোল গানের ।

 

সময়ের কাল ক্রমে গানের ধরন কিছুটা হলেও বদলে গেছে। আগে যেমন গানের ধরন ছিল গ্রামের পরিবারের মন জয় করা ।যেমন , যে দেবে কাটা কাটা তার হবে সাত বেটা “, “যে দেবে মুঠো মুঠো তার হবে হাত ঠুটো “, “যে দেবে ফালি ফালি তার হবে হাত খালি”।এমনটাই ছিল। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কৃষ্ণকথা রাধা কথা যেমন আছে। তারসাথে রঙ্গ বঙ্গ বিভিন্ন রাজনৈতিক কাজে ভোট প্রচারের উদ্দেশ্যে এই ধরনের গান ব্যবহার করেছে অনেকেই।

 

আরও  পড়ুন    অস্থায়ী কর্মীদের পুনরায় কাজে নিয়োগের দাবিতে মালদা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ঘেরাও

 

এবছরও রাখাল বালকেরা দল বল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গান উপস্থাপন করেছেন । পাশাপাশি সমাজ সচেতন করার গান তাদের গলায় শোনা যায় । এবারের গানের ধরন টা একটু আলাদা । এবারের গান হল করোনার গান। করোনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছে রাখল বালকেরা । পাশাপাশি যেহেতু তারা করণা বিধিকে উপেক্ষা করতে পারবে না তাই তাদের লোকসংস্কৃতিকে বজায় রাখার জন্য তারা কয়েকজন মিলে এই বনভোজন করবেন বলে জানালেন শিল্পী নিত্য গোপাল ঘোষ।

 

তাদের লোকসংস্কৃতিকে বজায় রেখেছে। আধুনিক সমাজের বুকে মানুষ হাজার ব্যস্ততার মাঝেও কিছু মানুষ এখনো আছেন যাদের সেই পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির দিকে নজর দিয়ে তাকে রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ৷তাদের এহেন প্রয়াসকে আমরা কুর্নিশ জানায় । লোকসংস্কৃতিকে ভালোবাসে তার অতীত ইতিহাস চিনিয়ে দেওয়াটা রাখাল বালকের চেষ্টা ।এই প্রাপ্তি সমাজের বড় পাওনা বলে মনে করেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যাক্তি কবি, সাহিত্যিক তাপস কুমার মিত্র।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top