বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করায় তরুণীর উপর হামলা। বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে অপহরনের চেষ্টা , বাধা পেয়ে নাবালিকার গলায় ছুরি চালিয়ে চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে পালাল এক ব্যক্তি । আশঙ্কায় সাহসিনী নাবালিকা । বুধবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার ক্ষিরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের বলিশ্বরপুর গ্রামে এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার গোবর্ধনপুর এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা ।
১৫ বছরের নাবালিকাকে দেখার পর পছন্দ হয়ে গেছিল ৫৫বছরের প্রৌঢ়ের।বারবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েওছিল মেয়ের বাড়িতে । কিন্তু বুড়োর হাতে মেয়ে দিতে নারাজ মেয়ের পরিবার। তাই অপহরনের পরিকল্পনা নেয় ওই ব্যক্তি। কিন্তু বাধা দেয় ওই সাহসিনী কন্যা। বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ায় তাকে অপহরণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে শেষ মেশ ওই কিশোরীর গলায় ছুরি বসিয়ে দিল প্রৌঢ়।
নাবালিকা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। যদিও গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বিয়ে করা নয়, বিয়ের ফাঁদে ফেলে মেয়ে পাচারই এই ব্যক্তির আসল কারবার।জানা গেছে ওই সাহসিনী কন্যার নাম আসমা খাতুন। ১৬ বছরের আসমা পিংলা গার্লস হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।অন্যদিকে মুস্তাক খাঁন নামের ওই ব্যক্তির বাড়ি ক্ষীরাইতে।। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ওই কন্যা। তার বাবা ওই ব্যক্তির অধীনে কাজ করার সুবাদে তাদের বাড়িতে মাঝেমধ্যে আসত সে।
মাস খানেক আগে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে মেয়েটিকে দেখতে আসে ক্ষীরাই গ্রামের ওই ব্যক্তি। বাড়িতে আসায় দুর্ব্যবহার করেননি মেয়েটির বাবা মা। মেয়েটিকে দেখে যায় ওই প্রৌঢ়। কিন্তু মেয়ের বাবা-মা জানিয়ে দেয় তার সঙ্গে তাঁরা মেয়ের বিয়ে দেবেন না। মেয়েটিও এই বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে। এরপরও বেশ কয়েকবার মেয়ের বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় ওই ব্যক্তি। কিন্তু প্রতিবারই মেয়ের বাবা সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় বলিশ্বরপুরে মেয়েটির বাড়ির পাশেই একটি ম্যাজিক-শো অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
আর ও পড়ুন শহীদ তিতুমীরের ২৪১ তম জন্মদিন উদযাপন নারকেলবেড়িয়ায়
আসমা সেই ম্যাজিক-শো দেখতে গিয়েছিল।সঙ্গে ছিলেন মা , পিসি । রাত ৯ টা নাগাদ শো শেষ হলে তারা বাড়ি ফিরে আসেন । ওই সময় একটি মারুতি ভ্যান মাঠে এসে দাঁড়ায়। এক ব্যক্তি আসমার নাম ধরে ডাকে। মেয়েটি কিছু বুঝতে না পেরে ওই মারুতি ভ্যানের কাছে যেতেই ওই ব্যক্তি তাকে জোর করে গাড়ির ভেতরে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই অসমসাহসী কন্যা রুখে দাঁড়ায়।
লোকটির সঙ্গে ধস্তাধস্তির পাশাপাশি চিৎকার করতে থাকে সে। আসমার চিৎকার শুনে ছুটে আসে মেয়ের বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা। অপহরণ করাতো সম্ভবই নয় উল্টে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখে মেয়েটির হাত থেকে বাঁচতে লোকটি পকেট থেকে ছুরি বের করে মেয়েটির গলায় বেশ কয়েকটি কোপ বসিয়ে দেয়।এরপরই লুটিয়ে পড়ে ওই ষোড়শী কন্যা। পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি।
গ্রামের লোকেরা তড়িঘড়ি ওই নাবালিকাকে নিয়ে রওনা হয় পিংলা গ্রামীন হাসপাতালে। কিন্তু তার গলার আঘাত এতটাই গভীরে ছিল যে কোনও ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকরা। রাতেই তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন তাঁরা। এরপরই নাবালিকাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করে দেন। বর্তমানে সে আশঙ্কা মুক্ত হলেও তার আঘাত অত্যন্ত গুরুতর বলে জানা গেছে।