সিজার করতে গিয়ে মুত্রথলি কাটলো প্রসুতির

সিজার করতে গিয়ে মুত্রথলি কাটলো প্রসুতির

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
Telegram
সিজার

সিজার করতে গিয়ে মুত্রথলি কাটলো প্রসুতির। মৃতপ্রায় মহিলাকে নিয়ে কলকাতায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বালুরঘাটের হতদরিদ্র পরিবার। সরকারি হাসপাতাল ফেরত প্রসূতি মহিলার শরীরে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

 

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাটের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমের। অসুস্থ মৃতপ্রায় মহিলাকে ভর্তি করাতে কলকাতায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বালুরঘাটের এক হতদরিদ্র পরিবার। এদিকে বুধবার অভিযুক্ত চিকিৎসক সঙ্গীতা দাসের শাস্তির দাবি জানিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন রোগীর বাড়ির লোকেরা। দেখানো হয়েছে বিক্ষোভও

 

জানা গেছে বালুরঘাট শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একে গোপালন কলোনি এলাকার বাসিন্দা পেশায় মুরগি বিক্রেতা রনজিত দাস। ১০ জানুয়ারী তার স্ত্রী অম্বিকা কুমারী দাসকে পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাকে ছুটিও দিয়ে দেওয়া হয় সেখান থেকে। ১৩ জানুয়ারী তারিখে ফের পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই প্রসুতি মহিলা।

 

এরপর ১৪ জানুয়ারী তারিখে ওই মহিলাকে আবারও ছুটি দিয়ে দেয় বালুরঘাট হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলে অভিযোগ। যারপরেই একপ্রকার কোন উপায় না পেয়ে প্রথম থেকে চিকিৎসা করানো ডাক্তার সঙ্গীতা দাসের শরনাপন্ন হন অসহায় ওই পরিবার। যারপরেই বালুরঘাটের একটি বেসরকারী নার্সিং হোমে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই মহিলার অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসক সঙ্গীতা দাস বলে অভিযোগ।

 

১৪ জানুয়ারী যেখানেই একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন অম্বিকা কুমারী দাস নামে ওই মহিলা। এরপর ওইদিন রাতেই আচমকা অসুস্থ ওই মহিলা কে মালদা মেডিকেল কলেজে রেফার করে দেন বালুরঘাটের ওই বেসরকারী নার্সিং হোম কতৃপক্ষ বলেও অভিযোগ। যেখানে চিকিৎসাকালীন সময়ে বাড়ির লোকেরা জানতে পারে, সিজার করবার সময় অম্বিকার মূত্রথলি কিছুটা কেটে গিয়েছে।

 

যেখান থেকেই তার রক্তক্ষরণ ঘটছে বলেও অভিযোগ। এরপরেই কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েন পরিবারের লোকেরা। মালদা মেডিকেল কলেজে অসুস্থ মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ১৭ জানুয়ারী কলকাতায় তাকে রেফার করে দেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে সরকারি হাসপাতালে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও চিকিৎসা করাতে অসমর্থ হন বালুরঘাটের হত দরিদ্র ওই পরিবার। এরপর বাড়ি বন্ধক রেখে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অসুস্থ ওই মহিলার চিকিৎসা করান তার পরিবারের লোকেরা।

 

কিন্তু টাকা না থাকায় ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে সেখান থেকে ছুটি করিয়ে একপ্রকার বাধ্যতামূলক ভাবেই বাড়িতে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকেরা। ১৫ ফেব্রুয়ারী অসুস্থ ওই মহিলার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে আবারও বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করান তারা। কিন্তু তারপরে ফের রেফার করান বালুরঘাট হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলে অভিযোগ।

 

মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ ওই মহিলাকে ফের কলকাতায় নিয়ে গেলেও সরকারি কোন হাসপাতালে ভর্তি করাতে না পেরে দ্বারে দ্বারেই ঘুরছেন তার পরিবারের লোকেরা। এদিকে এদিন দুপুরে চিকিৎসক সঙ্গীতা দাস এর শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এর দ্বারস্থ হয়েছেন অসুস্থ মহিলার পরিবারসহ এলাকার মহিলারা। দেখানো হয়েছে বিক্ষোভও।

 

অসুস্থ মহিলার শ্বশুর মন্টু দাস বলেন, বাড়ি বন্ধক রেখে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হয়নি বৌমা। সামান্য সন্তান প্রসবও হচ্ছে না সরকারী হাসপাতালে। বারংবার ভর্তি করেও ফেরত দিয়েছে হাসপাতাল। এখন কি করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না। সঙ্গীতা দাস নামে ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

 

আর ও পড়ুন    ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ায় ৩টি বাংলাদেশি ট্রলারসহ ৮৮ জন মৎস্যজীবী গ্রেফতার

 

প্রতিবেশী তথা বিক্ষোভকারী বিজয়া দাস ও মৌ দাসরা বলেন, সরকারি হাসপাতাল কোন চিকিৎসা না করিয়ে বারবার ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রসুতি মহিলাদের সন্তান প্রসবও হচ্ছে না সরকারী হাসপাতালে। বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওই মহিলার মূত্রাশয় কেটে দিয়েছে সঙ্গীতা দাস নামে এক চিকিৎসক। নিজেদের ভুলের কারণে নার্সিং হোমে ভর্তি করার জন্য ৫০ হাজার টাকাও তারা নেন নি। অভিযুক্ত ওই’চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

সঙ্গীতা দাস নামের ওই চিকিৎসক কে এদিন ঘটনা জানিয়ে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঠিক নয়। ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক সাধারণ বিবেক কুমার জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

RECOMMENDED FOR YOU.....

Scroll to Top