শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন পরিচালনা করেন ৩০ জন মহিলা কর্মী । মহিলা স্টেশন ম্যানেজার। পয়েন্টসম্যান তিন জন। তাও মহিলা। পোর্টার দু’জন। তারাও মহিলা। জুনিয়র কমার্শিয়াল ক্লার্ক চার’জন। মাল্টিস্কিলড স্টাফ ১১ জন। সব মহিলা। চারজন গেটকিপার। চারজন গেটকিপার। তাদের মধ্যেও দুজন মহিলা। সব মিলিয়ে ৩০ জন মহিলা কর্মী। আর এরা সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন পরিচালনা করেন।
পুরুষ বলতে হাতেগোনা দু’একজন। কিন্তু তাতে কুছ পারোয়া নেহি। অনায়াসে ট্রেনের অভিমুখ শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, সকাল থেকে রাত ৩৬৫ দিন পরিচালনা করছেন। আর তারা সবাই মহিলা। শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন। দেশের মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক রেল স্টেশন। যেই স্টেশনে পদধূলি রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের মতো মনিষীদের।
আর ২০২২ সালে সেই স্টেশনের রাশ মহিলাদের হাতে। শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল তো বটেই, গোটা রাজ্যের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মহিলা পরিচালিত স্টেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজ্যে যেমন এই ধরনের স্টেশন আর দ্বিতীয়টি নেই, তেমনি গোটা দেশের হিসেব ধরলে এ ছাড়া আর মাত্র তিনটি স্টেশন রয়েছে, যেখানে মহিলারাই ট্রেন আসা-যাওয়া, সিগনাল, লগ, অপারেশন থেকে যাবতীয় কাজ পরিচালনা করেন। ফলে ব্যতিক্রমী হিসেবে ইতিমধ্যেই রাজ্যের নজর কেড়েছে স্টেশনটি।
আর ও পড়ুন নারী দিবস উপলক্ষে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানে রক্তদান
৩০ জন মহিলা শৌচাগার রক্ষক থেকে স্টেশন ম্যানেজার, নিখুঁতভাবে পরিচালনা করছেন সব কাজ। তাও পুরুষের কোন অংশে একরত্তিও কম নয়। স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টেশন ম্যামেজার প্রতিমা দে বলেন আমাদের স্টেশনে নতুন যাঁরা আসেন তাঁরা সবাই মহিলা বলে অনেকে চমকে যান। ভাল করে খুঁটিয়ে দেখেন। প্রথম প্রথম অস্বস্তি হত, এখন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে।
প্রত্যেক মহিলা কর্মী পুরুষদের মতো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছ । “এখনকার মেয়েরা সীমান্তে লড়ছে। কোথাও পিছিয়ে নেই। আমিও কাজ করছি। সত্যি বলতে অবশ্যই সহযোগিতার প্রয়োজন হয়৷ আর এখানে তা পেয়েছি। আমরা মহিলারাই সম্মানের সঙ্গে কাজ করছি।
এখনও পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা মহিলারাই সকাল থেকে রাত এই স্টেশনে কাজ করি। চিন্তার কিছু নেই। আমরাও কাধে কাঁধ মিলিয়ে লাক করতে পারি । স্টেশনটি পরিচালনার সমস্ত কাজই এখন পুরোদমে চালাচ্ছেন মহিলারা। দিন-রাত চব্বিশ ঘন্টা ডিউটি করতে হচ্ছে মহিলাদের ।