জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার শুমারির প্রথম দিন নির্বিগ্নেই সম্পন্ন হল। সরাসরি গণ্ডার দেখে গণ্ডার গণনা করছেন গণনাকারিরা। গণনার প্রথম দিনেই কয়েকটি গণ্ডার শাবকের দেখা মিলেছে। যা দেখে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকরা উল্লসিত। শুরুর দিনের আবহাওয়াতেই গণ্ডারের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন বনকর্মীরা। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডি এফ ও দীপক এম বলেন, “ গণ্ডারের গণনার প্রথম দিন নির্বিগ্নেই কেটে গেছে। গণনার প্রথম দিন আমরা খুব ভাল আভাস পেয়েছি।
দুই দিনের শুমারি শেষ হবে শনিবার। জলদাপাড়া জঙ্গলে গণ্ডার গুনতে যাওয়া দল গুলো নির্বিগ্নেই আবার জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে এসেছে। গণনা শেষে যাবতীয় তথ্য জানাতে পারব আমরা।” শুক্রবার সকাল থেকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার শুমারি শুরু হয়েছে। ২১২ বর্গ কিলোমিটারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের প্রায় ১৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় এই গণনা হচ্ছে। জাতীয় সড়ক , বন বস্তি বাদ দিয়ে জঙ্গলের যে এলাকায় মুলত গণ্ডারের আবাস্থল তার সবটাই এই গণনা এলাকার মধ্যে রাখা হয়েছে ।
জানা গিয়েছে ২০১৯ সালে শেষ গণ্ডার শুমারিতে আলিপুরদুয়ার জেলার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে ২৪৫ থেকে ২৪৭ টি গণ্ডারের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। এবছর গণ্ডার শু মারিতে জলদাপাড়া গণ্ডারের সংখ্যা ৩০০ কাছাকাছি পৌছে যাওয়ার আশা করছেন বিভিন্ন মহল। জানা গিয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান জুড়ে গণ্ডার শুমারির জন্য মোট বনাঞ্চলকে ৫৫ টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। মোট ৫৫ টি ব্লকে ৫০ টি পর্যবেক্ষন সারি রয়েছে। সব সারিতে বনকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী, ফরেস্ট গাইড ও জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোকেরা গণ্ডার গ্ণনার কাজ করবেন। মোট ২৮২ জন বনকর্মীদের সঙ্গে থাকবেন ৩২ জন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী। এছাড়া সর্বমোট ৪৮ জন ফরেস্ট গাইড ও ৬৩ জন জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোক এই গণ্ডার শুমারিতে অংশগ্রহন করছেন।
আরও পড়ুন বসিরহাটের ইছামতি পাড়ে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের এ সব এলাকায় পায়ে হেটে পৌছানো সম্ভব নয়, সেই সব এলাকায় কুনকি হাতির পিঠে চড়েই গণ্ডার গণনার কাজ করছেন গণনাকারি দল। এই কাজে প্রায় ৫০ টির বেশি কুনকি হাতিকে কাজে লাগিয়েছে বনদফতর। গণ্ডার শুমারির কারনে শুক্রবার ও শনিবার এই দুই দিন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে সব রকম পর্যটন বন্ধ রয়েছে। রবিবার থেকে ফের পর্যটন খুলে যাবে জলদাপাড়ায়। উল্লেখ্য গোটা এশিয়াতে এক শৃঙ্গ গণ্ডারের অন্যতম বাস্স্থান রয়েছে আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। এই বনাঞ্চল এক শৃঙ্গ গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত। সেই কারনে এই বনাঞ্চলে গণ্ডারের সংখ্যার ওপর তার রক্ষনাবেক্ষন নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন বিষয় নির্ভর করে । আর সেই কারনেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গণ্ডারের গণনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানান তোরজোর শুরু হয়েছে।