মায়ের কোলে ফিরল দুই চিতা শাবক। বন্যেরা বনেই সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে তা মানুষ বা পশু যেই হোক না কেন। কবির লেখা যতার্থতা ফের মিললো আলিপুরদুয়ার জেলার হামিল্টনগঞ্জে, এবার অবশ্য বাঘের ক্ষেত্রে। বনদপ্তরের অক্লান্ত চেষ্টায় দুই ব্যাঘ্র শাবক ফিরে পেল মায়ের কোল অপরদিকে সন্তান না পেয়ে বাঘিনী হিংস্র হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা দূর হলো এই সফল প্রয়াসে।
প্রসঙ্গত গত শনিবার বন বিভাগের হামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জ কে কালচিনির ব্লকের চুয়াপাড়া চা বাগানের তরফে জানানো হয় যে, ওই চা বাগানের চার নম্বর সেকশনে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দু’টি চিতা শাবক। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন বনকর্মী আধিকারিকরা, উদ্ধার হওয়া ছোট দুই চিতা শাবক কে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় কাটাচ্ছিলেন বন দপ্তরের কর্মীরা। শাবক দুটি এতটাই ছোট যে পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে গেলেও তাদের প্রাণ বাঁচানোও ছিল প্রায় অসম্ভব। তাই চা বাগানে রেখে যাওয়া দুই চিতা বাঘের শাবক কে মানুষের ছোঁয়া বাঁচিয়ে ,তাদের মায়ের ফিরে আসবার অপেক্ষায় দিন গুনছিল বনদপ্তর ও চা বাগান কর্তৃপক্ষ। তাদেরই যৌথ প্রচেষ্টায় নির্বিঘ্নে মায়ের কোলে ফিরে গেল দুই সদ্যজাত চিতা শাবক। শনিবার ওই এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও ওই মা বাঘের হদিশ পায় নি বন দফতর । অগত্যা ওই এলাকাটিকে ঘিরে ফেলে সেখানে বসানো হয় ট্র্যাপ ক্যামেরা । যাতে ওই বাচ্চা দুটির সমস্ত কর্মকান্ড ধরা পড়ে ক্যামেরায়।
আরও পড়ুন – ‘কোনও চক্রান্ত নেই,’ হাইকোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাট নিয়ে রিপোর্ট দিল কেন্দ্র
বনদপ্তরের অনুরোধে চুয়াপাড়া চা বাগানের চার নম্বর সেকশনে কাজও বন্ধ করে দেয় চা বাগান কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত ওই এলাকায় মানুষের অনুপস্থিতির সুযোগে রবিবার বিকেলে শাবক দু’টির কাছে ফিরে আসে মা লেপার্ডটি। দুধ খাইয়ে মুখে তুলে দুই শাবককে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে চলে যায়। পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছে বনদপ্তরের পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায়।বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পশ্চিমের উপক্ষেত্র অধিকর্তা প্রবীণ কাসোয়ান বলেন “শাবক দু’টির বয়স খুব কম ছিল ,তাই কোনোরকম ঝুঁকি নেওয়া হয় নি। শেষ পর্যন্ত সকলের সহযোগিতায় প্রয়াস সফল হয়েছে । মা এসে শাবক দুটোকে নিয়ে গিয়েছে। সন্তান না পেলে বাঘিনীটি হিংস্র হয়ে আক্রমণ করতে পারতো মানুষদের সেই দুশ্চিন্তা দূর হলো জানান তিনি।