মুসলিম ভাইয়ের দান করা জমির পথ বেয়ে হিন্দু ভাইয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে শ্মশানে। সব ধর্মের পিঠস্থান সম্প্রীতির অনন্য নজির বসিরহাটের মথুরাপুর ও গোবিন্দপুর সংযোগস্থলের ভদ্রখালি পারে শ্মশান। নবরূপে সাজে সজ্জিত হচ্ছে বসিরহাটের দুই নম্বর ব্লকের খোলাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাপুর ও গোবিন্দপুর এক বিঘা জমির উপরে বৈতরণী প্রকল্পের উদ্যোগে আধুনিক শ্মশান পেল, বসিরহাট ২, নম্বর ব্লকের ৮, লক্ষ মানুষ।
তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মৃত্যু হলে শবদেহ শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে কখনো ২০, কিলোমিটার আবার কখনো ৩০,কিলোমিটার দূরে যেতে হতো। না হলে ফাঁকা মাঠে মাটিতে মৃতদেহ পুতে দিতে হতো। দীর্ঘ ৯,বছর ধরে এই শ্মশান তৈরি হয়েছে, একদিকে বিশ্রামাগার অন্যদিকে পরিশোধিত পানীয় জল পাশাপাশি শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা হয়েছে।
পাশের শ্মশান কালী, করোনাকালে দু’বছর কাজের অগ্রগতি ঘটেনি। এইবার সেই কাজ শেষের পথে ,আগামী ১৩, ই জ্যৈষ্ঠ শনিবার তার শুভ দ্বারোদঘাটন হবে। এই শ্মশানের বিশেষ তাৎপর্য হল, পাঁচ মুসলিম ভাইয়ের জমির দান করা জমির মধ্য দিয়ে প্রায় ৪০০,মিটার একটি কংক্রিটের রাস্তা শ্মশানের মূল প্রাঙ্গণে গেছে, , মুসলিম ভাইরা যদি এই জমিদার না দিত,তাহলে শ্মশানের রাস্তা বের হতো না।কাজ অসম্পূর্ণ হতো। তাই একদিকে মুসলিম ভাইয়ের দান করা জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা তার উপর দিয়ে দেহ নিয়ে গিয়ে শ্মশানের শেষকৃত্য করবে হিন্দু পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুন – সাঁকরাইলের রোহিনী এলাকায় ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর আহত তিন যুবক, চাঞ্চল্য এলাকায়
এক অনন্য সম্প্রীতির বার্তা। সব সম্প্রদায়ের মধ্যে মেলবন্ধন। খোলাপোতা পঞ্চায়েতের প্রধান অপারেশ মুখার্জি ও মন্দির কমিটির সদস্য প্রকাশ রায় বলেন, যে এখানে দীর্ঘদিনের মানুষের দাবী ছিল শ্মশানে শবদেহ না করতে পেরে অনেকে মাটিতে পুতে দিত। এই ব্লকে প্রায় ৮, লক্ষ মানুষের বসবাস।
তাই শ্মশান খুবই প্রয়োজন ছিল। পাশাপাশি এখানে সব ধর্মের মানুষের একত্রে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। আজকে মুসলিম ভাইদের যাওয়া আসার পথ না দিলে শ্মশান মূল প্রাঙ্গণে মৃতদেহ নিয়ে আসা যেত না। তাই এইটা করতে পেরে আমরা শান্তি পেলাম। আগামী ১৩,ই জ্যৈষ্ঠ শনিবার এখানে সব ধরনের মানুষের মেলবন্ধন ঘটবে ও বাল্য ভোজন দেয়া হবে। শ্মশানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে এসে ভিড় জমাবে। জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে ,এটাই সাম্প্রতিক বাংলা।